সিভিরোদনেতস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের ভাগ্যে ‘আত্মসমর্পণ নয়তো মৃত্যু’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:২০ পিএম, ১৩ জুন ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৯:৩৬ পিএম, ১৩ জুন ২০২২ সোমবার
পূর্ব ইউক্রেনের সিভিরোদনেতস্ক শহরের ৭০ শতাংশ এলাকাই এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, তারা ইতোমধ্যেই শহরটির কেন্দ্রস্থল থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের বিতাড়িত করেছে।
শহরটির চারদিকেই খণ্ডযুদ্ধ চলছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে দোনেৎস্কের একজন রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী সামরিক নেতা এদুয়ার্ড বাসুরিন বলেছেন, সিভিরোদনেতস্কে যে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আছে তাদের সামনে বিকল্প হচ্ছে "হয় আত্মসমর্পণ নয় মৃত্যু।"
রোববার রুশরা সিভিরোদনেতস্ক ও লিসিচানস্ক শহরের মধ্যে সংযোগকারী তিনটি সেতুর দুটিই উড়িয়ে দেয়। এখন তৃতীয় সেতুটি ধ্বংস করার জন্য রুশরা প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। সেটা করতে পারলে সিভিরোদনেতস্ক ইউক্রেনের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তবে রুশপন্থী মিলিশিয়া নেতা বাসুরিন দাবি করেছেন যে তৃতীয় সেতুটিও এর মধ্যে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে - কিন্তু বিবিসি তা নিশ্চিত করতে পারেনি। ইউক্রেনের সরকারও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি।
সিভিরোদনেতস্কের গভর্নর বলেছেন, সম্ভবত আজ বা আগামীকালের মধ্যেই রুশরা পুরো শহরটি দখল করার চেষ্টা করবে। শহরটির কেন্দ্রস্থল থেকে ইউক্রেনের সৈন্যদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে । গত কয়েকদিন ধরে তাদের অবস্থানগুলোর ওপর ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হয়।
লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলছেন, সিভিরোদনেতস্কের ৭০ শতাংশ এলাকাই এখন রুশ নিয়ন্ত্রণে ।
তিনি আরো জানান, বিশেষ করে শহরের আজোট নামের একটি রাসায়নিক শিল্প কারখানার ওপর প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে, যেখানে প্রায় ৫০০ বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি শিশু রয়েছে। কিন্তু প্রচন্ড গোলাবর্ষণের কারণে তাদের উদ্ধারের কোন চেষ্টা করা যাচ্ছে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তার বাহিনী প্রতি মিটার মাটির জন্য লড়াই করে যাবে , এবং তিনি আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র দেবার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
স্বঘোষিত দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের একজন সামরিক প্রতিনিধি এদুয়ার্ড বাসুরিন বলেছেন, সিভিরোদনেতস্কে যে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আছে তাদের অবশ্যই আত্মসমর্পণ করতে হবে, নয়তো মরতে হবে।
মিডিয়ার সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ইউক্রেনের সৈন্যরা এ শহর থেকে বেরুতে পারবেনা, কারণ সবশেষ সেতুটিও এর মধ্যে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
সিভিরোদনেতস্ক কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এই শহরটিকে দখল করার ওপর রাশিয়া খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে কারণ সিভিরোদনেতস্ক এবং এর সংলগ্ন আরেকটি শহর লিসিচানস্ক মিলে পুরো জায়গাটি হচ্ছে শিল্পকারখানাসমৃদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক কেন্দ্র।
এই দুই জোড়া শহর দখল করতে পারলে রাশিয়ার হাতে লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে। এই অঞ্চলের কিছু অংশ ইতোমধ্যেই রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
এই লুহানস্ক এবং পার্শ্ববর্তী দোনেৎস্ক যা দক্ষিণ ইউক্রেনের মারিউপোল থেকে উত্তরে রুশ সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত - মিলেই হচ্ছে ডনবাস অঞ্চল, যা রাশিয়া তাদের ভাষায় মুক্ত করতে চায়, এবং এটা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট পুতিনের শীর্ষ অগ্রাধিকার।
আর মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে ডনবাসে রাশিয়া যদি সাফল্য পায় তাহলে মস্কো পুরো এলাকাটিকেই একসময় নিজের অংশ করে নেবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসবি/