ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

দেশে প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২০ এএম, ১৫ জুন ২০২২ বুধবার

শুরু হলো কাঙ্ক্ষিত ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’। সপ্তাহব্যাপী এ শুমারি চলবে ২১ জুন পর্যন্ত।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

শুমারি শুরুর আগে ১৪ জুন রাত ১২টাকে ‘শুমারি রেফারেন্স পয়েন্ট/সময়’ হিসেবে ধার্য করা হয়।

দেশের মোট জনসংখ্যা এখন কত, তা জানতেই মূলত রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাসস্ট্যান্ডসহ দেশে এ ধরনের স্থানগুলোতে ভাসমান মানুষ গণনাসহ তাদের সম্পর্কে মৌলিক জনমিতিক, আর্থ-সামাজিক ও বাসগৃহসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হবে জনশুমারি।

এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একটি ওয়েবভিত্তিক ইনটিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুতসহ জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমে (জিআইএস) গণনা এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের কন্ট্রোল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে।

জনশুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে শুমারি কর্মী হিসেবে সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার গণনাকারী, ৬৪ হাজার সুপারভাইজার এবং বিবিএস’র সাড়ে ৪ হাজারের অধিক কর্মচারী এ প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছেন। এছাড়াও বিবিএস বহির্ভূত বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রায় ৯০০ জন কর্মচারী জোনাল অফিসার হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।      

শুমারিতে সঠিক তথ্য প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক গান, নাটিকা, ডকুড্রামা, শুমারি কাউন্ট ডাউন, ডকুমেন্টারি দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে জনশুমারি প্রচার, প্রচার সামগ্রী বিতরণ, ডকুমেন্টারি প্রচারসহ শুমারি চলাকালে মাইকিং করা হচ্ছে।  

জনশুমারি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পূরণ ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠনে প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

শুমারির গুণগতমান রক্ষা করে দ্রুততম সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ করার তাগিদ দেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সর্বক্ষেত্রে সুষম ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রমাণক নির্ভর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নির্ভুল তথ্য-উপাত্ত থাকা আবশ্যক।

“রূপকল্প ২০৪১, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-সহ অন্যান্য উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ এর তথ্য-উপাত্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা রাখি।”

জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে জনশুমারি ও গৃহগণনায় অন্তর্ভুক্ত হতে সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব গৃহ ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ দ্রুততম সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

পরিসংখ্যানের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়ন-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সঠিক, নির্ভরযোগ্য এবং সময়োপযোগী পরিসংখ্যান ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। আওয়ামী লীগ সরকার সকলক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য গ্রহণযোগ্য ও মানসম্পন্ন পরিসংখ্যান সংগ্রহ এবং প্রকাশ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

“আমি আশা করি, ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত জাতীয় সম্পদের সুষম বণ্টন, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়নসহ অন্যান্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পরিবীক্ষণে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।”

শুমারিকর্মীদের সঠিক সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাদেরন সহযোগিতা করতে সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দশ বছর পর-পর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র: বাসস
এসএ/