ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

দেশে ফেরার দাবিতে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ১৯ জুন ২০২২ রবিবার

নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ‘গো হোম ক্যাম্পেইন’ ব্যানারে বিক্ষোভ করছে রোহিঙ্গারা।

রোববার (১৯ জুন) উখিয়ার ৯, ১৪, ১৩, ১৭, ২ ওয়েস্ট, ১ ওয়েস্ট, ৪ ও ১৮নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৮টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। যেখানে উল্লেখিত ক্যাম্পগুলোর পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা অংশ নেন। 

এছাড়াও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে একযোগে বিক্ষাভ শুরু হয়। মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে নিজের দেশ ফিরিয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানিয়েছে রোহিঙ্গারা। 

‘ব্যাক টু হোম’ এই স্লোগানে বিক্ষোভে লাখো রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করেন। নির্যাতিত রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ১৯ দফা দাবি উত্থাপন করে।

একই দাবিতে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন দুর্বৃত্তের গুলি নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। তবে, এবারের সমাবেশের একক কোন আয়োজক কিংবা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ সামনে না এলেও প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী লেখা হয়েছে।

এই বিক্ষোভে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বার্মার ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করা হয়।

উখিয়ার ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, “আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই। আশা করছি এবারের সমাবেশটির মাধ্যমে উত্থাপিত রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ব পাবে।”

রোহিঙ্গা ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সভাপতি কিন মং বলেন, “সম্মান ও মর্যাদার সাথে মিয়ানমারে ফিরতে চাই। সমাবেশে এই দাবিটাই জানাচ্ছি বিশ্ববাসীর কাছে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্র‍য় দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।”

অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, “রোহিঙ্গারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দাঁড়িয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানাচ্ছে। তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।”

তবে, এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ছাড়া রোহিঙ্গাদের বড় কোনো জমায়েত কিংবা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত ৮ এপিবিএন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসাইন জানান,  ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ৮ এপিবিএনের তৎপরতা সবসময় অব্যাহত আছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জঘন্য নৃশংসতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকেরা নির্যাতিত হয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে বিতাড়িত হয়েছিল। যা ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে ভয়াবহ দেশত্যাগ হিসেবে বিবেচিত। 

এএইচ