ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার আশঙ্কা (ভিডিও)

মানিক শিকদার, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৭ পিএম, ২০ জুন ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১২:১২ পিএম, ২০ জুন ২০২২ সোমবার

সিলেট, সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অতিবৃষ্টি ও পরিবেশের বিরূপ প্রভাবকে দুষছেন তারা। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, বর্ষা মৌসুমে উজানের বৃষ্টি আরও কিছুদিন থাকতে পারে।

চারদিকে পানি আর পানি। রাক্ষুসে স্রোত চোখের সামনেই কেড়ে নিচ্ছে সাজানো সংসার।

যেখানে কখনোই পানি ওঠেনি সেখানে গলাপানি। বাঁচার আকুতি বানভাসীদের। আকস্মিক বন্যায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে না পারায় খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে চরম মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা। 

শতবছরের ভয়াবহ এই বন্যার মূলে ভারতের অতিবৃষ্টি ও পরিবেশের বিরূপ প্রভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরিবেশবিদ আব্দুস সোবহান বলেন, “ভারতের যে বনাঞ্চল সেগুলো উজাড় হয়ে যাচ্ছে। যখনই বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে তখনই বৃষ্টির পানি ধারণ করা হচ্ছে, সরাসরি গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। যদি বনাঞ্চল থাকত তাহলে গাছের পাতায় পড়ে গোড়া থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে যাবে। তারপর এটা নীচের দিকে নেমে আসবে। কিন্তু সেটা না থাকায় খুব দ্রুত নেমে আসছে।”

আসামে প্রায় এক মাস ধরে বয়ে চলা বন্যার পানি গড়িয়ে পড়ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে। এখনও ভাসছে আসাম। তাই বাংলাদেশের বন্যাও দীর্ঘ সময় চলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ““বাংলাদেশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের যে প্রভাব সেটা কিন্তু থেকে যাবে। আপাতত যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসবে বা আসছে সেটি কিন্তু অব্যাহত থাকবে।”

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কিকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, “এবারের বন্যার পানিটা নিষ্কাশন হতে একটু সময় নিচ্ছে। এটা লক্ষ্য করেছি এবারের বন্যার শুরু থেকে। এটা বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ার একটা কারণ।”

বন্যা কবলিতদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও ত্রাণের ব্যবস্থা না করা হলে চরম বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরিবেশবিদ আব্দুস সোবহান বলেন, “যানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। বন্যা তো হচ্ছে প্রতিবছরই কিন্তু নিকট অতীতে এরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”

তবে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ত্রাণের কোন অভাব নেই। উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, “কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং বিমানবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

যেকোন বিপর্যয় মোকাবেলা করতে দেশের মানুষ সব সময় ঐক্যবদ্ধ। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

ত্র্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সামর্থ্যানুযায়ী তারা এই দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।”

এএইচ