ঢাকা, শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৬ ১৪৩১

নেত্রকোনায় বন্যার আরও অবনতি, পানিবন্দী ২ লাখ মানুষ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:৪৮ পিএম, ২০ জুন ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০২:৫১ পিএম, ২০ জুন ২০২২ সোমবার

নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সব কয়টি নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে জেলার দশ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। 

বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বানবাসি মানুষের মাঝে নগদ টাকা, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হলেও প্রশাসনের এই সহায়তা অনেকের কাছেই পৌঁছেনি। 

জেলার হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীতে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। 

প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, জেলার ১০টি উপজেলার ৬২টি ইউনিয়ন পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বন্যাকবলিত হয়েছে। ঢলের পানিতে অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য পুকুর পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। 

এ পর্যন্ত বন্যাদূর্গত মানুষদের জন্য ৩২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাতে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার ৯৩৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারেননি তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কাছাকাছি কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু কোন স্থানে।
  
নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার এবং ত্রাণ সহায়তা দিতে মেজর জিসানের নেতৃত্বে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর ১৩০ সদস্যের একটি দল। রোববার থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা চালাছে দলটি।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, নৌকায় করে বন্যার্তদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, তারা সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করছেন। যতটা পারছেন আশ্রয় কেন্দ্রে শুষ্ক খাবার দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

এছাড়াও বন্যাকবলিত এলাকায় বিতরণের জন্য ১শ. মেট্রিক টন চাল, ২০ লাখ টাকা ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য জেলা ও উপজেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, আগামী ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সেক্ষেত্রে নদ-নদীর পানি আরও বেড়ে যাবে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরএমএ/এএইচ