ঝালকাঠিতে কুকুরের কামড়ে একদিনে আহত অর্ধশত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫৩ পিএম, ২১ জুন ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৫৬ পিএম, ২১ জুন ২০২২ মঙ্গলবার
ঝালকাঠি ঝালকাঠিতে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘন্টায় কুকুরের কামড়ে পুলিশ, শিশু-বৃদ্ধ, নারীসহ ৬৬ জন আহত হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আহত ৬৬ জনকে চিকিৎসায় র্যাবিক্স-ভিসি দেয়া হলেও মূল ভ্যাকসিন র্যাবিক্স আইজি সরবরাহ না থাকায় দেয়া যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ভ্যাকসিন র্যাবিক্স আইজি সরবরাহ না থাকায় আক্রান্তরা স্থানীয় ও পার্শবর্তী বরিশালের ওষুধের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছে। ইতিপূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষ মহাখালী আইসিডিডিআরবি থেকে জলাতংক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে পৌরবাসীকে স্বল্পমূল্যে ও অসহায়-দরিদ্রদের বিনামূল্যে সরবরাহ করলে বর্তমানে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে কারণে র্যাবিক্স আইজি ভ্যাকসিন সংকটের সুযোগে দু/একটি ওষুধের দোকানে দু-চার ডোজ ভ্যাকসিন চরা মূল্যে বিক্রি করছে বলে জানাগেছে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা থেকে রাত পর্যন্ত ১৩ জন ও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫৩ জন কুকুড়ের কামড়ের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। আক্রান্ত মোট ৬৬ জনের মধ্যে অধিকাংশই শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও শ্রমজীবী ছাড়াও দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ কনষ্টবল আজিজুর রহমান কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে।
আহতরা জানান, হঠাৎ পেছন থেকে কুকুর এসে পায়ে কামড়ে দিয়ে বীরদর্পে চলে যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ লোকেরা কামড়ের পর নিজেকে সামলে নিতে চেষ্টা করলেও শিশু ও নারীরা আক্রান্ত হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পরছে। রেজিষ্টার অনুযায়ী আক্রান্তরা অধিকাংশই পৌর শহরের কালীবাড়ী সড়ক, ফায়ার সার্ভিস মোড়, কুমারপট্টি সড়ক, সাধনার মোড় ও পূর্বচাঁদকাঠি, বিকনা ও প্রেট্রলপাম্প মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্ধা।
এবিষয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ব্রাদার মনিন্দ্র নাথ জানান, ঝালকাঠি হাসপাতালে র্যাবিক্স-ভিসি ভ্যাক্সিন সরবারহ থাকলেও জলাতংক প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় আইজি ভ্যাক্সিনের সংকট থাকায় আহতদের বাহিরের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অনেক রোগী বাইরের দোকানে ভ্যাক্সিন না পাওয়ায় ইনসেপ্টা ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধিকে আমরাও ফোন করে ঝালকাঠিতে জরুরি ভিত্তিতে আইজি ভ্যাক্সিন সরবারহের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
স্থানীয় মেডিসিন ট্রেডার্স, শান্তা ও ফেরদৌস ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত র্যাবিক্স আইজি ভ্যাকসিনের চাহিদা কম থাকায় ওষুধের দোকানের ষ্টকে পরিমান সীমিত থাকায় হঠাৎ প্রয়োজনে আমাদের বরিশাল থেকে সংগ্রহ করে দিতে হচ্ছে। তাই সবাইকে তাৎক্ষণিক ভ্যাকসিন দেয়া যাচ্ছেনা বা সংগ্রহ করে দেয়া বেশি মূল্যেও কিনতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠি পৌরসভায় মেয়র ও সচিবকে না পেয়ে স্যানিটারী ইন্সপেক্টরের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে জানায়, বিগত দিনে আমরা ইনজেকশন দিয়ে বেওয়ারিশ বা পাগলা কুকুর মাড়লেও বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের নিষেধের কারণে কুকুর নিধন করা যাচ্ছেনা। আর পৌর কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেয়ায় বিগত ৪/৫ বছর ধরে আমরা কোন ভ্যাকসিন সংগ্রহ বা বিতরণ করিনা।
এব্যাপারে ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডাঃ মো. শিহাব উদ্দিন জানান, বিষয়টি শুনে আমি হাসপাতালে তত্তাবধায়কের সাথে আলাপ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, র্যাবিক্স-ভিসি সরবারহ স্বাভাবিক রয়েছে তবে র্যাবিক্স আইজি ভ্যাকসিন সরবারহ না থাকায় দ্রুত সংগ্রহের উদ্দোগ নেয়া হয়েছে। জলাতংক প্রতিরোধে দুটো ভ্যাকসিনই প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
কেআই//