ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বিশ্বের ৬ষ্ঠ ধনীর বিচ্ছেদ, ৯৩ বিলিয়ন ডলার ভাগের চ্যালেঞ্জ!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৩২ পিএম, ২১ জুন ২০২২ মঙ্গলবার

সেরগেই ব্রিন ও নিকোল শানাহান

সেরগেই ব্রিন ও নিকোল শানাহান

এবার ভাঙতে চলেছে গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সেরগেই ব্রিনের চার বছরের বিয়ে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা ব্রিনের এই বিচ্ছেদের খবরে জল্পনা শুরু হয়েছে স্ত্রীর খোরপোশের অঙ্ক নিয়েই।

৪৮ বছর বয়সী এই ধনকুবের তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিকোল সানাহানের কাছে বিচ্ছেদ চেয়েছেন চলতি মাসেই। আদালতকে গুগল প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, তাদের দু’জনের মধ্যে যে বিভেদ বা মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, তা আর মিটমাট করা সম্ভব নয়।

এদিকে, সেরগেইয়ের এই বিচ্ছেদ মামলার পরই শুরু হয়েছে তাদের বিচ্ছেদ পরবর্তী বিষয়- স্ত্রীকে খোরপোশ ও সন্তানের হেফাজত ইত্যাদি নিয়ে।

গত চার বছরে সেরগেই ব্রিনই তৃতীয় ধনকুবের, যিনি বিবাহবিচ্ছেদের মুখে পড়লেন। তার আগের দুই উত্তরসূরি মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোসের বিচ্ছেদের মামলাও শেষ পর্যন্ত মোটা অঙ্কের খোরপোশে গিয়ে তবেই থামে।

এক বছর আগেই বিচ্ছেদ হয়েছে বিল এবং মেলিন্ডা গেটসের। তাদের মধ্যে ভাগাভাগি হওয়ার কথা ছিল ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সম্পত্তির। 

তারও দু’বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় বেজোস এবং ম্যাকেঞ্জি স্কটের। তাদের সামনে ছিল ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ভাগ করার চ্যালেঞ্জ। 

আর সম্প্রতি স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলাকারী সেরগেই ব্রিনের সামনে থাকছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ভাগ করার চ্যালেঞ্জ।

২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর বিয়ে করেন সেরগেই ও নিকোল। সেই বিয়ে হয়েছিল অনাড়ম্বর, জাঁকজমকহীন এক অনুষ্ঠানে। ধনকুবেরসুলভ বাহুল্য ছিল না সেখানে।

গুগলের সহ প্রতিষ্ঠাতা সেরগেই ব্রিন বর্তমানে শুধুমাত্র অ্যালফাবেটের এক জন বোর্ড সদস্য। তিনি ২০১৮ সালে গুগলের প্রশাসনিক পদে ছিলেন। নিকোলও তখন একজন সফল উদ্যোক্তা। ক্লিয়ার অ্যাকসেস আইপি নামে একটি সংস্থার সিইও। তিনি একজন খ্যাতনামা আইনজীবীও বটে।

২০১৫ সাল থেকেই সেরগেই ব্রিনের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয় নিকোলের। কারণ, ওই বছরই গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং তার প্রাক্তন স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। আগের বিয়েসূত্রে দুই সন্তানের বাবা সেরগেই। নিকোল এবং সেরগেইয়েরও দু’বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকেই আলাদা থাকছেন সেরগেই এবং নিকোল। এরপর চলতি বছরের জুনেই ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তাক্লারা আদালতে ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেন সেরগেই।

মামলায় সেরগেই তাদের কন্যার যৌথ দায়িত্ব চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের দেখভালের জন্য স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন নেই তার। একইসঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, নিকোলও সন্তান পালনের জন্য তার কাছ থেকে কোনো অর্থ সাহায্য পাবেন না।

কিন্তু সেরগেইয়ের অর্থে কী ভাগ পাবেন নিকোল? আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, এ ব্যাপারে আগাম একটি ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন সেরগেই। বিয়ের আগেই তিনি নিকোলেকে দিয়ে একটি প্রাক-বিবাহ চুক্তিপত্রে সই করিয়েছিলেন। যার জেরে বিচ্ছেদ হলেও নিকোল ধনকুবেরের সম্পত্তির দাবি করতে পারবেন না।

যদিও আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি যেহেতু বিচারাধীন, তাই সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারে।

পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে খোরপোশ দিতে হয়েছিল সেরগেইকে। কিন্তু সেই অর্থের পরিমাণ এ পর্যন্ত জানতে পারেনি কেউ।

নিকোল ও সেরগেইয়ের বিচ্ছেদের মামলাটিতেও গোপনীয়তা বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে আদালতে। ফলে এ ক্ষেত্রেও শেষ পর্যন্ত তার ৯ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বিপুল সম্পত্তি, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৬ কোটি টাকার সমান। 

আর এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের ভাগাভাগি গোপনে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল বলে মনে করছেন অনেকে। সূত্র- নিউ ইয়র্ক পোস্ট।

এনএস//