পদ্মাসেতু পাড়ি দেয়া প্রথম নারী বাইকার রুবা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:১৩ পিএম, ২৬ জুন ২০২২ রবিবার
রুবাইয়াত রুবা
জমকালো উদ্বোধনের একদিন পরই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে পদ্মা সেতুর দ্বার। রোববার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল শুরু হয় স্বপ্নের সেতুতে। এরপরই বহু প্রতিক্ষিত এই সেতু দিয়ে পার হওয়ার উৎসবে মেতে ওঠে সবাই।
এর মাঝে প্রথম নারী মোটরসাইকেল চালক হিসেবে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়ার দাবি করেছেন রুবাইয়াত রুবা নামে এক তরুণী। রাজধানী শেওড়াপাড়া থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে এসে সকালে সেতুতে ওঠেন তিনি।
রুবাইয়াত রুবা বলেন, ‘আমি নারী বাইকার হিসেবে পদ্মা সেতুতে প্রথম টোল কেটে উঠেছি। খুব ভালো লাগছে। যদিও সড়কে অনেক যানজট ছিল, এটা স্বাভাবিক। অন্য মহাসড়কে যেমন ভিড় থাকে, ওরকমই ছিল। তবে বেশি সময় লাগেনি, বাইকের একটা আলাদা সারি আছে।’
এই তরুণী আরও বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, তারা যেন নিয়ম-কানুনগুলোর দিকে একটু নজর দেন। উল্টো দিকে গাড়ি আসা দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ, এসব কিছু যেন না হয়। আর যতই আইন-কানুন করা হোক, আমরা জনগণ যদি সচেতন না হই, তাহলে কোনও লাভ নেই। সবাইকে সতর্ক হতে হবে।’
সকালে পদ্মা সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল দিয়ে যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সেতুর ওপর দিয়ে পদ্মা পার হচ্ছে। প্রথমদিনে পদ্মা সেতু দিয়ে পার হচ্ছে বেশ কিছু পণ্যবাহী ট্রাকও।
জাজিরা প্রান্ত থেকে আসা কাঁচামালবাহী ট্রাকের চালক আজিজ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘আগে দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো ফেরিতে। আবার কোনও কোনও সময় আরও বেশি সময় লাগতো। সেই তুলনায় আজকের জ্যাম কিছুই না। ভালো লাগছে, এখন থেকে ঢাকায় দিনে দিনে মালামাল বহন করা যাবে। এখন সবজি নিয়ে যাচ্ছি, বিকালে ঢাকা থেকে আবার মালামাল নিয়ে ফিরে আসবো।’
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যাবে না। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জারি করা এ সংক্রান্ত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন জানান, সেতু নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ থাকায় যান চলাচল শুরুর দিন ভোর থেকেই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ভিড় করে কয়েকশ' যানবাহন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষও যথাযথ প্রস্তুতি রেখেছে, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন।
এদিকে, পদ্মা সেতু পারাপারে সরকার নির্ধারিত টোল হার আগেই ঠিক করে দিয়েছে। সেই হিসবে-
-
মোটরসাইকেল ১০০ টাকা,
-
কার ও জিপ ৭৫০ টাকা,
-
পিকআপ ১ হাজার ২০০ টাকা,
-
মাইক্রোবাস ১ হাজার ৩০০ টাকা,
-
ছোট বাস (৩১ আসন) ১ হাজার ৪০০ টাকা,
-
মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) ২ হাজার টাকা,
-
বড় বাস (থ্রি-এক্সেল) ২ হাজার ৪০০ টাকা,
-
ট্রাক (পাঁচ টন পর্যন্ত) ১ হাজার ৬০০ টাকা,
-
মাঝারি ট্রাক (পাঁচ টনের বেশি ও সর্বোচ্চ আট টন পর্যন্ত) ২ হাজার ১০০ টাকা,
-
মাঝারি ট্রাক (৮ টনের বেশি ও সর্বোচ্চ ১১ টন) ২ হাজার ৮০০ টাকা,
-
ট্রাক (থ্রি-এক্সেল পর্যন্ত) ৫ হাজার ৫০০ টাকা,
-
ট্রেইলার (ফোর-এক্সেল পর্যন্ত) ৬ হাজার টাকা।
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করে এর সফল উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এনএস//