ঢাকা, রবিবার   ০৩ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

উদ্বোধনের পরদিনই বন্ধ বিআরটিসি বাস!

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পিএম, ৩০ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার

বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস

বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস

নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস সার্ভিস চালু করা হয় ২৮ জুন। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঘটা করে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়েই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসকসহ আ’লীগ নেতৃবৃন্দ। 

কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র এক দিন পরই (২৯ জুন) ব্যক্তি মালিকানাধীন সোনাপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বাধার মুখে বন্ধ হয়ে যায় বিআরটিসি ওই বাস সার্ভিস।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, সোনাপুর থেকে হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়কে কোনো ভালো মানের বাস সার্ভিস নেই। বিশাল এ জনপদের মানুষকে জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য নির্ভর হতে হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং লক্কড়ঝক্কড় ব্যক্তি মালিকানাধীন বাসের ওপর। এতে নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় এ রুটের লাখো মানুষকে। বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েও বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে বিবাদেও লিপ্ত হতে হয় যাত্রীদের। এসব চালকদের বিরুদ্ধে যাত্রীদের মারধর করারও বেশ নজির রয়েছে এই সড়কে। 

যাত্রীদের এমন দুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ চারটি ডাবল ডেকার বাস সার্ভিস শুরু করে। যার ভাড়া সোনাপুর থেকে ঘাট পর্যন্ত ৪০ টাকা। আর ব্যক্তি মালিকানাধীন বাস নিচ্ছে ৬০ টাকা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিচ্ছে ১২০ টাকা। 

যা গত মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসক দেওয়ার মাহবুবুর রহমান, জেলা আ’লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহানসহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিল।

সূত্র জানায়, উদ্বোধনের পর দিন দুটি বাস চালু করা হয় সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত। বাস দুটির মধ্যে একটি সোনাপুর বিআরটিসি ডিপো থেকে বের হয়ে সোনাপুর জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত যেতেই সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়ে। কোনোভাবে সোনাপুর থেকে চরজব্বার পর্যন্ত গেলে সেখানে শ্রমিকরা বাধা দেয়, বাধা ঠেলে একবার গেলেও ওই দিনই বাধ্য হয়ে বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিআরটিসি সোনাপুর বাস ডিপোর ম্যানেজার মো. রাজু মোল্লা বলেন, সোনাপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির লোকজনের বাধার মুখে নিরাপত্তার স্বার্থে নতুন এ সার্ভিসটি বন্ধ করতে বাধ্য হন তারা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

বাধা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোনাপুর বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. সামছুল হক সোহেল জানান, এ রুটে বর্তমানে ২০-২৫টি বাস চালু রয়েছে। পর্যাপ্ত বাস চালু থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বিআরটিসির বাস চালু করায় লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাদের। শুধু বাস মালিকরাই নয়, এখানে সিএনজি ও বাসের দুই হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। তাই শ্রমিকরা বিআরটিসির বাস সার্ভিসে বাধা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বসে এর সমাধান করা হবে। 

একইসঙ্গে সরকারি সার্ভিসে যারা বাধা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এনএস//