ইউএন রাইটস প্রধানের চীন সফরে ‘সুযোগ’ নষ্টের অভিযোগ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ৩০ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার
সম্প্রতি ইউএন রাইটস প্রধান মিশেল ব্যাচেলেটের চীন সফর জিনজিয়াং এবং তিব্বতের মতো অঞ্চলে উইঘুর ও তিব্বতিদের বিরুদ্ধে বেইজিং এর অমানবিক ব্যবহার ও সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি তদন্ত করার একটি সুবর্ণ সুযোগ হতে পারতো। তবে ইউএন রাইটস প্রধানের সফরটি একটি ‘বিফল ঐতিহাসিক সুযোগে’ রূপ নিয়েছে।
১৭ বছরের মধ্যে চীনে ইউএন প্রধানের প্রথম চীন সফর বর্তমানে প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশ্ন উঠেছে এই যুগে জাতিসংঘের ভূমিকা এবং চীনের প্রভাব নিয়ে।
গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, তার সফরের শেষে ইউএন রাইটস প্রধান এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছেন তার সফরটি ‘তদন্ত' ছিল না এবং এটি ‘চীনের সবচেয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার একটি সুযোগ ছিল’।
আরেকটি চীনা মিডিয়া সিজিটিএন বলেছে যে এই সফর ‘পরিস্থিতি পরিষ্কার করার এবং অনেক ভুল তথ্য এবং অন্যান্য জিনিস যা প্রকাশ করা হয়েছে তা দূর করার সুযোগ দিয়েছে’।
চীনে ছয় দিনের সফরের পর, ব্যাচেলেট সফর সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার ধারণা প্রদান করেননি এবং তার জিনজিয়াং-এ একটি কারাগার পরিদর্শন ছিল ‘পোটেমকিন-স্টাইল শ্যাম'- এমনটাই বলছে রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ)।
উইঘুরদের জন্য কাজ করা একটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রুশান আব্বাস বলেছেন, ‘হাইকমিশনার চীনের গণহত্যার তদন্ত করতে অস্বীকার করে এবং চীন সরকারের বর্ণনার পুনরাবৃত্তি করে, জাতিসংঘে তাদের প্রচারকে আরও পাকাপোক্ত করার মাধ্যমে নিজেকে এবং তার অফিসকে অপমান করেছেন।'
তিনি তার অফিসের দায়িত্ব এবং জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা নীতিকে অবহেলা করেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন আব্বাস। আব্বাস ব্যাচেলেটকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানান।
ব্যাচেলেটের অত্যন্ত হতাশাজনক সফরের পর, ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস তার অফিসকে পূর্ব তুর্কিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে তার স্বাধীন মূল্যায়ন প্রকাশ করার জন্য জোরালোভাবে আহ্বান জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার জন্য চীনা সরকার জবাবদিহি করতে বাধ্য হয়।
তিব্বতের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন (আইসিটি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের চীন সফর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে এই সফর কমিউনিস্ট শাসনকে ‘রাজনৈতিক বিজয়’ দিয়েছে। তিব্বতি গোষ্ঠীর মতে, জাতিসংঘের অধিকার প্রধান চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নীতি প্রণয়ন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণ করেছেন।
‘শনিবারের বিবৃতিটি জিনজিয়াং অঞ্চলে ব্যাপক বিভ্রান্তিকর তথ্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু পশ্চিমা দেশ, তাদের মিডিয়া এবং চীন বিরোধী শক্তির জন্য একটি চপেটাঘাত ছিল' বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া।
তব্বতি ওই গ্রুপটি আরও বলেছে, ব্যাচেলেট তিব্বত সফর করেননি এবং এই অঞ্চলের পরিস্থিতির কথা শুধুমাত্র সামান্য উল্লেখ করেছেন। তিব্বত সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে কম স্বাধীন একটি জায়গা বলেও তারা উল্লেখ করেছে।
কয়েক ডজন মানবাধিকার গোষ্ঠী বলেছে, চীনা সরকার উইঘুর এবং জিনজিয়াং-এর অন্যান্য তুর্কি গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে গণ আটক, নির্যাতন, সাংস্কৃতিক নিপীড়ন করেছে যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সমান।
এসি