ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

২৭ মণ ওজনের ‘স্বপ্নরাজ’কে ঘিরে দু’পা হারানো রুবিনার স্বপ্ন (ভিডিও)

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৫৫ এএম, ২ জুলাই ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০২:৩৬ পিএম, ২ জুলাই ২০২২ শনিবার

পরম যত্নে স্বপ্নরাজকে বড় করেছেন পঞ্চগড়ের মেয়ে রুবিনা। ২৭ মণ ওজনের বিশালদেহী গরুটি কোরবানির হাটে উঠতে প্রস্তুত। সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারানো রুবিনার স্বপ্ন, আদরের গরুটিকে বিক্রি করে নিজে সাবলম্বী হবেন, করাবেন মা-বোনের চিকিৎসা, ভাইকে লেখাপড়াও।

উচ্চশিক্ষা অর্জনে পিতৃহারা রুবিনা ভর্তি হন ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারান দুটি পা। চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্নপূরণে নামেন অদম্য মেধাবী মেয়েটি। চিকিৎসার খরচ থেকে বাঁচানো টাকায় একটি ছোট গরু কিনে শুরু করেন লালন-পালন।

গরুটিকে ঘিরেই পরিবারের সব স্বপ্ন থাকায় এর নাম দেয়া হয় স্বপ্নরাজ।

রুবিনার মায়ের শরীরে টিউমার। বড় বোন মানসিক প্রতিবন্ধী। একমাত্র ছোটভাই এখনও লেখাপড়া করছেন। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা স্বপ্নরাজই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছে পরিবারটির একমাত্র অবলম্বন।

আর্থিক সংকটে ঘাস, ভূষি আর ভুট্টা খেয়েও লম্বায় আট ফুট আর উচ্চতায় পাঁচ ফুট ছাড়িয়ে গেছে স্বপ্নরাজ। এটিকেই এখন নয় লাখ টাকায় বিক্রি করে নিজেদের সংকট কমাতে চান রুবিনা।

রুবিনা বলেন, “দেশি গরুগুলোকে বিক্রি করে করে স্বপ্নরাজের খাবার যোগাতে হয়েছে।”

রুবিনার আশা, কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি গরুটি কিনে তাদের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করবেন।

রুবিনা আরও বলেন, “গরুর খামারটি বড় করতে চাই। সরকারের কাছে দাবি, একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের। ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার হলে আমার কাজগুলো আরও সহজে করতে পারবো।” 

আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশিরাও চান অসহায় পরিবারটির স্বচ্ছলতা ফিরুক স্বপ্নরাজকে ঘিরেই।

রুবিনার মা বলেন, “পরিবার চালাতে খুবই সমস্যা। মেয়েটার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় আছি।”

প্রতিবেশিরা জানান, “সবাই যদি সহযোগিতা করে তাহলে সে ভাল একটা চলার পথ খুঁজে পাবে।”

আরও ভালোভাবে গরু লালন-পালনে রুবিনাদের সব সহযোগিতা দেবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল হাই বলেন, “বিনামূল্যে চিকিৎসা, টিকা প্রদান, কৃমিনাশক ওষুধ এবং অন্যান্য যে সুযোগ-সুবিধা দরকার তাও আমরা তার জন্য করবো।”

হুইল চেয়ারে বসেই প্রতিবন্ধিতা জয় করা রুবিনা এখন অন্যদের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস।

এএইচ