টাকা আত্মসাতের মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:১২ এএম, ৫ জুলাই ২০২২ মঙ্গলবার
টাকা আত্মসাতের মামলায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়ালকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (সদর) আদালতের বিচারক শামছুল আরেফিন এ নির্দেশ দেন। এর আগে ওই মামলায় তিনি অস্থায়ী জামিনে ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীক অংশীদারিত্বের ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ইউনুছ হাওলাদার রূপম।
মামলায় চেয়ারম্যান ছৈয়াল ছাড়াও তার ভাতিজা বাবুল ছৈয়ালকে বিবাদী করা হয়। তিনি পালতক রয়েছেন।
চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল চররমনী মোহন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হাসান জানান, ব্যবসায়িক কারণে বাদী ইউনুছ হাওলাদার রূপম অভিযুক্ত ইউছুফ ছৈয়ালের কাছে ৩৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন। এ নিয়ে কয়েকবার বৈঠকে বসলেও তিনি টাকাগুলো পরিশোধ করেননি।
এর আগে চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল বিষয়টি মিমাংসার আশ্বাস জানিয়ে আদালত থেকে দুই মাসের অস্থায়ী জামিন নেন। তবে জামিন পেয়ে তিনি বিষয়টি কর্ণপাত করেননি।
সোমবার আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন চেয়ারম্যান। জামিন আবেদন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
এজাহার সূত্র ও বাদী রূপম হাওলাদার জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাটের মেঘনা নদীর লঞ্চ ও ফেরিঘাট বাদি রূপম ও বিবাদি ইউসুফ ছৈয়াল যৌথভাবে ইজারা নেন। তবে বিভাগীয় কমিশনারে কাছ থেকে ঘাটটি ইউসুফ ছৈয়াললের ভাতিজা ও মামলার ২য় আসামি বাবুল ছৈয়ালের নামে চুক্তিবদ্ধ করা হয়।
ঘাট ইজারা নিতে বাদি রূপম দুই দফায় ৩৩ লাখ টাকা চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন। ইজারা নেওয়ার পর চেয়ারম্যান কয়েক মাস ঘাটের লাভ্যাংশ প্রদান করলেও ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর থেকে রূপমকে লাভাংশ দেওয়া বন্ধ করে দেন। এছাড়া তাকে ঘাটে যেতে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়।
এতে বাধ্য হয়ে রূপম লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে ইউছুফ ছৈয়াল ও তার ভতিজা বাবুল ছৈয়ালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশনা দেয়।
পুলিশের তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আদালত বিবাদীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। এরই মধ্যে ইউপি নির্বাচন কেন্দ্রীক মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য আদালতে আপোষ-মিমাংসার আবেদন জানিয়ে জামিন চান ইউসুফ ছৈয়াল। আদালত তাকে দুই মাসের অস্থায়ী জামিন দেয়।
তবে ওই সময়ের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসা না করে স্থায়ী জামিন চাইতে গেলে চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
এএইচ