কোরবানির পশুর বর্জ্য পরিষ্কারে কী করবেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:২২ পিএম, ৯ জুলাই ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৯:৪১ পিএম, ৯ জুলাই ২০২২ শনিবার
ঈদুল আজহার দিন মুসলমানরা নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী পশু কুরবানি দিয়ে থাকেন। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশ থেকে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর বর্জ্য থেকে বিভিন্ন রোগবালাই ছড়ানোর আশঙ্কা তো থাকেই। এজন্য পশু কোরবানির পর পশুর উচ্ছিষ্টাংশ দ্রুত পরিস্কার করা জরুরি হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নেতা এবং প্রিভেনটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘কোরবানির সময় যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য তৈরি হবে তা শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে চাপালেই চলবে না। ব্যক্তি পর্যায়েও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এককভাবে, যৌথভাবে বা সমন্বিতভাবে যদি নাগরিকরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতে পারে তাহলে কোথাও বর্জ্যে ডুবে যাবে না।
তিনি বলেন, ‘এরআগে আমরা দেখেছি, অনেক নাগরিকই কোরবানির পরে বর্জ্যটা যেকোন স্থানে রেখে চলে যায়। এতে একদিকে যেমন নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হয়, তেমনি নগর কর্তৃপক্ষ এটা পরিষ্কার করতে সময় নেয়। ফলে সেখান থেকে দুর্গন্ধ এবং রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।’
বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যদি কুরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে সামগ্রিকভাবেই নানারকম মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই কুরবানির পশুর রক্ত, হাড়, নাড়ি-ভুঁড়ি, মল ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিষ্কার করা দরকার এবং তা যেন পরিবেশকে অস্বাস্থ্যকর করে না তোলে, সেদিকেও সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তি পর্যায়ে বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে সচেতনতার পাশাপাশি কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। তারা যেসব উদ্যোগের কথা বলেছেন তার মধ্যে রয়েছে-
প্রথমত, যারা নিজেদের বাড়িতে বা লনে কোরবানি করবেন, তাদেরকে অবশ্যই নিজ দায়িত্বে বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এককভাবে কোরবানি না করে, মহল্লা ভিত্তিক একটি নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করা যেতে পারে। এতে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সম্মিলিতভাবে বর্জ্য অপসারণও সহজ হয়।
তৃতীয়ত, কোরবানির পর একই ভবনের বেশ কয়েকটি পরিবার মিলে একটি সোসাইটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। যেমন, সবাই মিলে বর্জ্য অপসারণের জন্য লোক ঠিক করা যেতে পারে যারা কোরবানির পর পরই বর্জ্য সরিয়ে নিয়ে যাবে। এতে বর্জ্য অপসারণ দ্রুততর হয় বলে পরিবেশের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না।
চতুর্থত, জবাই কৃত পশুর গোবর ও উচ্ছিষ্ট আলাদা করে খোলা ভাবে না ফেলে সেগুলো বাড়ির পাশে কোনো মাঠে কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় গর্ত করে রেখে দিতে হবে। বা ব্যাগে ভরে নির্ধারিত স্থান যেমন নিকটস্থ ডাস্টবিন বা কন্টেইনারে ফেলতে হবে। সেখান থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বর্জ্য সহজেই সরিয়ে নিতে পারে।
পঞ্চমত, পশু জবাইয়ের স্থানে কোরবানির পর পশুর রক্ত জীবাণুনাশক পানি দিয়ে ধুয়ে দিয়ে ব্লিচিং ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে করে দুর্গন্ধ বা জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পারতে না পারে।
ষষ্ঠত, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুর চামড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন মাদরাসা, মসজিদ বা এতিমখানায় দান করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
এসি