ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

প্রবল বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের ১০ রাজ্য

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৪:৪১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২২ বুধবার

বর্ষা আসতেই ভারতের অন্তত ১০টি রাজ্যে বন্যার তাণ্ডব শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে পাহাড় ধস। বৃষ্টি ও বন্যায় গুজরাটেই মারা গেছেন ৬৯ জন, কাশ্মীরে ১৬ জন, মহারাষ্ট্রে ৮৫ ও ঝাড়খণ্ডে চারজন।

বর্যার সবে শুরু। এর মধ্যেই ভয়ঙ্কর বৃষ্টি হচ্ছে ভারতের অন্তত ১০টি রাজ্যে। শুরু হয়েছে বন্যার তাণ্ডব। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গুজরাটে। সোমবার আমেদাবাদে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পুরো শহর পানির তলায়। স্কুল, কলেজ, অফিস বন্ধ। শুধু আমেদাবাদ নয়, ডাঙ, নবসারি, তাপি, ভালসাদ, পাঁচমহল, ছোট উদয়পুর, খেড়ায় বন্যা হয়েছে।

বহু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩৩টি বড় দল বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। ভালসাদে ভারতীয় কোস্ট গার্ড ১৬জনকে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে নিরাপদ জায়গায় পাঠিয়েছে। রেললাইন পানির তলায় চলে যাওয়ায় অনেকগুলি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। রাজকোটে নেয়ারি বাঁধের উপর দিয়ে পানি বইতে শুরু করেছে।

বুধবার সকাল থেকে গুজরাটে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। 

মহারাষ্ট্রের সর্বত্র প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। মুম্বাই আবার ভেসেছে। পুনাতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পালঘরে ধস নেমেছে। তাতে একজন মারা গেছেন। থানেতেও ধস নেমেছে। একটি ছোট পাহাড়ে ফাটলও দেখা দিয়েছে।

নাগপুরে তিনজনকে নিয়ে একটি গাড়ি বন্যার পানিতে ভেসে যায়। এঘটনায় তিনজনই মারা গেছেন। তারা মধ্যপ্রদেশ থেকে নাগপুর এসেছিলেন। গাড়িটি একটি ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে ভেসে যায়।

গত কয়েকদিন ধরে বন্যা ও ধসের ফলে মহারাষ্ট্রে ৮৯ জন মারা গেছেন।

দিন কয়েক আগে কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রার সময় ক্লাউড বার্স্ট হয় এবং ১৬ জন তীর্থযাত্রী মারা যান। এরপর সেনাবাহিনীর তরফ থেকে রাস্তা ঠিক করে দেয়ার পর যাত্রা আবার শুরু হয়। কিন্তু আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তা এখন স্থগিত আছে।

হিমাচল প্রদেশের মানালিতে প্রবল বৃষ্টির ফলে ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা চকিত বন্যা হয়েছে। মানালির বাসস্ট্যান্ড ভেসে গেছে। বেশ কয়েকটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথের রাস্তা বৃষ্টির জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ, চামোলি্তে বেশ কয়েক জায়গায় ধস নেমেছে।  কেদারনাথের আবহাওয়ার দিকে সারাদিনরাত নজর রাখা হচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশে বন্যার অবস্থা বেশ খারাপ। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে। হারদা, বেতুল সহ বেশ কয়েকটি জেলার বড় অংশ পানির তলায় চলে গেছে। ভোপাল-বেতুল সড়ক বন্ধ করে দিতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় জানিয়েছে, প্রচুর মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ওড়িশায় মঙ্গলবার থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে বহু জায়গায় ধস নেছে। অনেক গ্রাম পানির তলায় চলে গেছে।

ঝাড়খণ্ডে ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ধানবাদ রেল স্টেশনের কাছে একটি নির্মাণকাজ চলার সময় ধস নামে। বেশ কিছু ট্রেন হয় ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে বা বাতিল হয়েছে। 

তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রেও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে এবং নদীগুলি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। আসামের শিলচর ও তার আশপাশের এলাকা এখনো জলমগ্ন।

পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো। এখনও সেখানে বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হয়নি।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/