ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেই অবসরের ঘোষণা তামিমের!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৬ এএম, ১৭ জুলাই ২০২২ রবিবার

তামিম ইকবাল খান

তামিম ইকবাল খান

স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এমন সাফল্যের দিনেই হুট করে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তামিম ইকবাল। নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন ওয়ানডে অধিনায়ক।

নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আজকে থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচনা করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।’

জাতীয় দলের হয়ে তামিম সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। গত অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণার আগেই তরুণদের সুযোগ দেয়ার কথা বলে নিজেকে সরিয়ে নেন তামিম। তারপরও টি-টোয়েন্টিতে তামিমের ফেরা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হচ্ছিল। 

এ কারণে গত ২৭ জানুয়ারি বিপিএল চলাকালীন হুট করেই চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে স্বেচ্ছায় বিরতিতে যান তামিম। চলতি মাসের ২৭ তারিখে ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ওয়ানডে অধিনায়ক টি-টোয়েন্টি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলাকালেও তামিম রহস্যজনক এক পোস্ট করেছিলেন। অবশ্য পোস্টটি খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকেনি। ৪ জুলাই সকালে মাত্র দুই শব্দে তামিম লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি’। এর সঙ্গে জুড়ে দেন হাত নাড়ানোর তিনটি ইমোজি। যার অর্থ দুই রকমই হয়- স্বাগত জানানো কিংবা বিদায় জানানো। 

এর আগে গত ৫ জুন টি-টোয়েন্টিতে ফেরার প্রশ্ন উঠলে বিরক্ত কণ্ঠে তামিম জানান, ‘টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমাকে তো বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা বলে দেন, নয়তো অন্য কেউ বলে দেয়। ওটাই চলতে থাকুক। এতদিন ধরে ক্রিকেট খেলি, এতটুকু তো ডিজার্ভ করি, কী চিন্তা করি না করি আমার মুখ থেকে শোনা। হয় আপনারা একটা ধারণা দিয়ে দেন অথবা অন্য কেউ এসে বলে দেয়। যখন কেউ বলেই দেয়, আমার এখানে বলার নেই আর।’

তামিমের এই বক্তব্য বোর্ড ভালোভাবে নেয়নি। বোর্ড প্রধান থেকে শুরু করে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বোর্ড প্রধান তো তামিমকে মিথ্যাবাদীই বলে ফেলেন, ‘ওর (তামিম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি (টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে) দাবিটি পুরোপুরি মিথ্যা। আমি তাকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। অন্তত চারবার টি-টোয়েন্টিতে ফেরার অনুরোধ করেছি।’

তবে এই ঘটনার পর খুব বেশি সময় নিলেন না তামিম। নির্ধারিত সময়ের আগেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে না ফেরার ঘোষণা দিয়ে দিলেন। যদিও স্বেচ্ছায় ৬ মাসের ছুটিতে যাওয়ার আগে তামিম বলেছিলেন, দলের প্রয়োজন হলে তিনি ফিরবেন। 

তামিম বলেন, ‘৬ মাস পর আমাকে আর দরকার পড়বে না। এটাই দোয়া করি, আমাদের দল অসম্ভব ভালো খেলুক। এ রকম যদি কোনও পরিস্থিতি আসে, বড় ইভেন্টের আগে টিম ম্যানেজমেন্ট-বোর্ড বা আমি যদি মনে করি, দলে আমাকে দরকার আছে, তবে নিঃসন্দেহে বিবেচনা করব।’ 

এই জায়গাতে কথা রাখেননি দেশসেরা এই ওপেনার। তামিমের অবর্তমানে সুযোগ পাওয়া ওপেনাররা কেউই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। ফলে বার বার তামিমের কাছেই ছুটে যেতে হয়েছে! শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার দিনে তামিম স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন, ‘আর নয়, অনেক হয়েছে।’

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৭৮টি ম্যাচ খেলা তামিমই দেশের হয়ে এই ফরম্যাটের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান। রয়েছে ৭টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসও। ২৪.০৮ গড়ে রান করেছেন ১৭৫৮টি। স্ট্রাইকরেট ১১৬.৯৬। সর্বোচ্চ স্কোর ১০৩*।

এনএস//