ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

অন্যায়ের প্রতিবাদে কলম ধরেছেন মেক্সিকোর যৌনকর্মীরা

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৮:৫১ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২২ রবিবার

করোনা মহামারীসহ নানা সময়ে অন্যায় অবিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে মেক্সিকোর যৌনকর্মীদের৷ তাদের অন্যায়-অবিচারের কথা সাধারণ গণমাধ্যমে না আসায় নিজেরাই হাতে কলম তুলে নিয়েছেন।

মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে অনেক নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন৷ কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর হোটেলগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তাদেরকে সেখান থেকে যখন রাস্তায় বের করে দেয়া হল, তখন সাধারণ মিডিয়া সে খবর দেখাল না৷ তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজেদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়-অবিচারের কথা নিজেরাই লিখবেন৷ তাদের মতে, সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্যই তো এটা হওয়া উচিত৷

পালোমা পাজ তাদের একজন৷ ২৮ বছর বয়সি এই ট্রান্সজেন্ডার নারী বললেন, ‘‘সাংবাদিকতা হল, একটা মাধ্যম যেখানে সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা যায়, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, জানানো যায় আমাদের সাথে কি ঘটছে৷''

পাজ এবং আরও ১০ জন নারী একটি মাসিক পত্রিকায় লেখেন, যার নাম ‘নোটিসাইয়ে'৷ এটি বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যায়৷ এটা প্রকাশ করে একটি বেসরকারি সংস্থা ‘স্ট্রিট ব্রিগেড'৷

এনজিও'র প্রতিষ্ঠাতা এলভিরা মাদ্রিদ জানালেন মূল ধারার গণমাধ্যমে যৌনকর্মীদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়৷ ‘‘এ কারণেই আমরা এই পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত নিলাম, যেটাতে যৌনকর্মীরা যৌনকর্মীদের কথা বলবে৷ ''

ম্যাগাজিনের সদস্যরা প্রতি মাসে মেক্সিকো সিটির সব যৌনকর্মীদের হাতে হাতে পত্রিকা পৌঁছে দেন৷ পাজ বলেন, ‘‘এটা হল কমিউনিটি জার্নালিজম৷ আমরা প্রতিদিন যা দেখছি সেটাই তুলে আনছি পত্রিকার পাতায়৷''

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যৌনকর্মী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘‘এটা আমাদের জানতে সাহায্য করছে বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে কি ঘটছে৷''   

জুনের সংস্করণে পত্রিকায় উঠে এসেছে করোনা মহামারীতে যৌনকর্মীরা তাদের ৭০ ভাগ উপার্জন হারিয়েছেন৷ এছাড়া একজন আদিবাসী ট্রান্সজেন্ডার যৌনকর্মীকে তার পার্টনারকে খুন করার অভিযোগে ১৪ বছরের সাজার কথা উঠে এসেছে পত্রিকায়৷ সেই রিপোর্টে তুলৈ ধরা হয়েছে কীভাবে ওই খুনের মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে৷

পাজ এবং তার সহকর্মীরা প্রায়ই সাংবাদিকতা বিষয়ক নানা কর্মশালায় অংশ নেন নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে৷ আর এক যৌনকর্মী কৃষ্ণা সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি বইয়ের সহ-সম্পাদনা করছেন৷ ওই বইতে সেসব যৌনকর্মীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে যারা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত৷

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/