পুলিশ কনস্টেবল হত্যায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ২১ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার
মেহেরপুরে পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিন হত্যা মামলায় আনিস মণ্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেন নামের ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের বিচারক বিচারপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আনিস মণ্ডল কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া গ্রামের কালু মণ্ডলের ছেলে, তাহাজুত হোসেন একই গ্রামের আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে, শাকিল হোসেন ও রুবেল হোসেন সোনাউল্লাহর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই গাংনী উপজেলার পিরতলা আইসি ক্যাম্পের এসআই সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বামুন্দি-কাজিপুর এলাকায় টহল থাকাকালীন সময়ে গোপন সূত্রে খবর পান মাইক্রোযোগে ওই সড়ক দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার করা হবে।
এসময় পীরতলা সাহেবনগর নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে আটকানোর জন্য রাস্তার উপরে কাঠের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। মাইক্রোবাসটি কাছাকাছি এসে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছের গুড়ির পাশ কাটিয়ে মাইক্রোচালক পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেন।
এতে বাধ সাধেন কনস্টেবল আলাউদ্দিন। এসময় হঠাৎ কনেস্টবল আলাউদ্দিনকে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে মাইক্রোবাসের বাম্পারে আটকে যান। মাদক ব্যাবসায়ীরা পালানোর সময় বাম্পারে আটকে যাওয়া কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে টেনেহিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
পরে হাড়াভাঙ্গা ডিএইচসিপি আর ফাজিল মাদ্রাসার সামনে স্পিড ব্রেকারের নিকট কনস্টেবল আলাউদ্দিন ছিটকে পড়ে যান। সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন।
ওই ঘটনায় এসআই সুবীর রায় বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই সঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক মামলাও করা হয়।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামিরা দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদুল আলম খোকন ও কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।
একই ঘটনায় ফেনসিডিল রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই আসামিদের আরও ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সিদ্দিক ও আতিয়ারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এএইচ