ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

কুর্দিস্তানে নিহতের ঘটনায় তুরস্ককে দায়ী করছে ইরাক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৩৪ পিএম, ২১ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার

ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে একটি পার্কে গোলার আঘাতে নয়জন বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার পর ইরাক ও তুরস্কের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই ইরাকি পর্যটক এবং নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছে।

এ ঘটনার জন্য স্থানীয় কর্মকর্তারা তুর্কি বাহিনীকে দোষারোপ করেছেন এবং ইরাক আঙ্কারা থেকে তাদের চার্জ ডি'অ্যাফেয়ার্সকে ফিরিয়ে নিচ্ছে। তুরস্ক বলছে যে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অনুগত বাহিনী এই হামলা চালিয়েছে।

ইরাকের রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চল এবং তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর জাখোতে একটি পার্কে ‘ভয়াবহ আর্টিলারি বোমা হামলা’ চালানো হয়েছে।

কুর্দি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলায় নিহত শিশুদের মধ্যে এক বছরের এক শিশুও ছিল।

হামলায় আহত হাসান তাহসিন আলী হামলাকে 'নির্বিচার' বলে অভিহিত করেছেন।

একটি হাসপাতালের সামনে থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমাদের যুবকরা মারা গেছে, আমাদের শিশুরা মারা গেছে, আমরা কার কাছে যাব? আমাদের একমাত্র ঈশ্বর আছে।’

ইরাক বাগদাদে তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদিমি এক টুইটে বলেছেন, ‘তুর্কি বাহিনী ইরাকের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে।’

ইরাকি শহর কারবালায় তুর্কি ভিসা কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভকারীরা তুরস্কের পতাকা পুড়িয়েছে। বাগদাদ এবং নাসিরিয়াতেও বিক্ষোভ হয়েছে। হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা অগ্রহণযোগ্য, এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষাসহ সব রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে।’

এই অঞ্চলে ঘাঁটি রয়েছে এমন কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তুরস্ক তার পর্যায়ক্রমিক হামলা জোরদার করছে। উত্তর ইরাকে এর সর্বশেষ প্রতিরক্ষামূলক আক্রমণ প্রায় তিন মাস আগে শুরু হয়েছিল এবং এর লক্ষ্য ছিল পিকেকে-কে দমন করা।

তবে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে, বুধবারের হামলা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ চালিয়েছে। পিকেকে-র উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে যে, ইরাকি সরকারের ‘সন্ত্রাসী প্রচারণা’ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত হবে না।

পিকেকে বৃহত্তর কুর্দি এলাকার আলাদা শাসন চায় এবং তারা তুরস্কের সাথে সশস্ত্র সংগ্রামে জড়িত। গোষ্ঠীটিকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে।

কুর্দিরা তুরস্কের জনসংখ্যার ১৫-২০ শতাংশ কিন্তু সেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিপীড়নের সম্মুখীন হচ্ছে। আঙ্কারার সরকার পার্লামেন্টে কুর্দি-পন্থী এইচডিপি দলকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। দলটি বর্তমান সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে রয়েছে।

এসি