ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

বস্তাবন্দি তরুণী উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের, নারী গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ২২ জুলাই ২০২২ শুক্রবার

অভিযুক্ত গুলশান বেগম ওরফে গুলজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

অভিযুক্ত গুলশান বেগম ওরফে গুলজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

ঠাকুরগাঁওয়ে টাঙ্গন নদীর ব্রিজের নীচ থেকে মাদরাসা ছাত্রী মাহফুজা খাতুনকে (১৪) বস্তাবন্দী প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনায় অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত গুলশান বেগম ওরফে গুলজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

গ্রেফতারকৃত গুলজানের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার কবিরাজহাটের বিজয়নগর হাজীপাড়ায়। তিনি ওই এলাকার আজিদুল ইসলাম অপুর স্ত্রী।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পিযুস দাস জানান, অভিযুক্ত গুলজানকে তার গ্রামের বাড়ি বীরগঞ্জ থানার কবিরাজহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন হলেও তাকে ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয় এবং আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য পরবর্তী অফিসকালীন দিন ধার্য্য করে আসামিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে, উদ্ধার হওয়া ওই ছাত্রীর ভাই বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তরুণীর কথিত স্বামী সাহাবুল ইয়ামিন ও গুলজান বেগমসহ ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজন ঠাকুরগাঁও টাঙ্গন নদীর ব্রীজের নীচ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ওই ছাত্রীকে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।

উদ্ধারকৃত ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়িতে গুলজান নামের এক নারী ভাড়া থাকতেন। তিনি গোপনে আমার কিছু গোপন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। আমাকে পাচার করে দেয়ার হুমকিও দিতেন। আমার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা আমাকে গত মে মাসে ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের খাতুনে জান্নাত কামরুন্নেছা কাওমী মহিলা মাদরাসায় কিতাব বিভাগে ভর্তি করে দেয়। আমি গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য অজু করতে বের হই। অজু শেষে দেখি চারজন ছেলে আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তারা আমাকে সেই ছবিগুলো নিতে চাইলে হাত বাড়াতে বলে। হাত বাড়ানো মাত্রই তারা আমাকে টেনে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে তারা আমাকে বেধড়ক মারপিট করে একপর্যায়ে তারা আমাকে বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলে। এরপর আর কিছু বলতে পারি না।’

ওই মাদ্রাসাছাত্রী বিবাহিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিন মাস আগে আমার বিয়ে হয়েছিল। তবে পারিবারিকভাবে নয়। এ নিয়েও ঝামেলা চলছে। আমি স্বামীর সঙ্গে থাকছি না।’

অপহরণকারীরা তাকে কেন ফেলে গেল জানতে চাইলে কিশোরী বলেন, ‘সে সময় সম্ভবত কয়েকজন লোককে আসতে দেখে আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়।’

এদিকে, ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি কামাল হোসেন মামলার অন্যান্য আসামিরাও শীঘ্রই গ্রেফতার হবে বলে জানান।

এনএস//