ঢাকা, শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১

টেকনাফের ইউএনওর ভাষা মাস্তানদের চেয়েও খারাপ: হাই কোর্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:৪৪ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২২ রবিবার

আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ঢাকা পোস্টের সাংবাদিককে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গালাগাল করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট।  

আদালত বলেছে, টেকনাফের ইউএনও কায়সার খসরু যে ভাষায় কথা বলেছেন তা মাস্তানের ভাষার চেয়েও খারাপ। 

রোববার (২৪ জুলাই) রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বিষয় উত্থাপন করলে এসব মন্তব্য করে হাই কোর্ট। 

টেকনাফের ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলেছে আদালত।
গত ২১ জুলাই ‘নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা হোয়াব্রাং এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। ফলে সেখানে থাকা ২৭টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপহারের ঘরগুলো এমন নিচু জায়গায় করা নিয়ে স্থানীয় লোকজন শুরু থেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, ঘর তৈরিতে মাটির নিচে ইট ব্যবহার করা হয়নি। এ ছাড়া নিম্নমানের ইট, বালি-রড, কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য তারা দায়ী করেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরু ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘‘বন্যা যখন আসছে মুজিববর্ষের ঘরগুলো চেনেনি হয়তোবা ও আশপাশের ঘরগুলো দেখেনি শুধু দেখেছে মুজিববর্ষের ঘরগুলো।
একটা চোর, আরেকটা সাংবাদিক, হলুদ সাংবাদিক ও ইয়াবার সঙ্গে জড়িত এমন সাংবাদিক আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। এগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি আমরা।’’

প্রকাশিত সংবাদে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরায় ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার প্রতিনিধির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত পৌনে ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তার অফিসিয়াল নম্বর থেকে কল করেন ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার প্রতিনিধি সাইদুল ফরহাদকে। 

রোববার ঘটনাটি নজরে আনা হলে হাই কোর্ট বলে, “ইউএনও কায়সার খসরুর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। একজন ‘রং হেডেড’ মানুষ শুধু এরকম গালিগালাজ করতে পারে। 
“ইউএনও যে ভাষা ব্যবহার করেছে তা মাস্তানের ভাষার চেয়েও খারাপ।”

দুদক আইনজীবী বলেন, দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়েছিলেন, এজন্য ইউএনও তাকে গালিগালাজ করেছে। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার আরো ধৈর্যশীল হওয়া উচিত ছিলো।

এ সময় হাই কোর্ট বলে, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের এসব কাজে উৎসাহিত করা উচিত।
 

এএইচএস/এমএম