আশ্রয়ণের ঘরে নতুন জীবনে বেদেরা (ভিডিও)
মিনালা দিবা, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ২৫ জুলাই ২০২২ সোমবার
স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় ভাসমান বেদে জীবনে মিলতো না কোনো নাগরিক সুবিধা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে পাল্টে গেছে এই জনগোষ্ঠীর ভাগ্য। আর দশটা সাধারণ নাগরিকের মতোই এখন তাদের প্রাত্যহিক দিনযাপন।
এক সময় নৌকায় ঘুরে ঘুরে বা ঘাটে ঘাটে নোঙর ফেলে চলতো জীবন-জীবিকা। এঘাট-ওঘাট হয়ে গ্রামে-গঞ্জেও ভিড়তো বেদেদের সেসব নৌকা। সমতলের মানুষকে সাপ খেলায়, নাচে-গানে বিনোদন জুগিয়ে কিংবা সাপের বিষ নামাতে ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবচ বিক্রি আর বুনো লতাপাতা, শেকড়-বাকড়ের ভেষজ ওষুধের ব্যবসায় চলতো তাদের সংসারের চাকা।
দেশের নদ-নদীর ভরা যৌবন নেই। পরিণত হয়েছে অনেকটা মরা গাঙে। বেদেরাও তাই কিছুতেই সুবিধা করতে পারছে না যাযাবরের সেই জীবনাচারে।
একই দেশে বসবাস করেও শিক্ষা-দীক্ষা, অফিস-আদালত সব জায়গায় বৈষম্যের শিকার এই ভাগ্য বিড়ম্বিত মানুষেরা।
দু:সহ সে অবস্থার পরিবর্তন এনেছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। এখন ভালোই আছেন সুবিধা পাওয়া মানুষগুলো।
বেদেরা জানান, “গুচ্ছগ্রাম দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা, সেই ঘরে থেকে আমরা বাঁচতেছি।”
তবে আর্থিক স্বচ্ছলতার অভাবে ঠিকমতো পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না অনেকের সন্তানেরা।
তারা জানান, “ক্লাস সেভেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি, এরপর লেখাপড়া বাদ দিয়ে আমাদের জাতিগত যে ব্যবসাটা সেটাই করতেছি।”
আরেকজন জানান, “সোর্স অব ইনকাম তো নাই, আমাদের চাষাবাদের কোন ল্যান্ড নাই, কোনকিছু নাই। ফোর ফাদার ভিক্ষাভিত্তির ডোর ডোর টু ভেগারস, এটাই আছে।”
সাহায্য পেলে পড়াশুনাটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত, বলেন এক তরুণ।
চিরায়ত সংস্কৃতি কিংবা জীবনাচারে পরিবর্তন এসেছে। যাযাবর থেকে গৃহী জীবনে খাপ খাইয়ে নিতে কিছু সমস্যা আর নানা চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সেসব মোকাবেলায় বাস্তবতার নিরিখে আদি পেশা ছেড়ে নতুন নতুন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন কেউ কেউ।
বেদেরা জানান, “তাবিজের দাম যদি চাই ১শ’ টাকা, বলে ৫ টাকা। আগের সেই হিসাব নাই। আগে মানুষের মনে একটা বিশ্বাস ছিল, এখন দেশে হয়ে গেছে অন্যরকম বিশ্বাস।”
সব মিলিয়ে কিছুটা মর্যাদাপূর্ণ জীবনে খুশি শত শত বছর ধরে নদীতে ভেসে বেড়ানো বেদেরা।
নদীর পরিবর্তে সমতলে বসবাসের ফলে বেদে সম্প্রদায় পেয়েছে ভোটাধিকার। আদি পেশা ছেড়ে শিক্ষা এবং ব্যবসায় রাখতে তারা ব্যাপক ভূমিকা।
এএইচ