‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১২ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ এখনো এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সফলতার শীর্ষে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সচিবালয়ে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
সারাদেশে ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে এটি ছিল আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ৩য় বৈঠক। এই বৈঠকে রাজধানী ঢাকা মহানহরীর চারপাশে পরিকল্পিত বাজার স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, এশিয়ার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভারতসহ অন্যান্য দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক কম।
এবছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুরে ১৩ হাজার, মালয়েশিয়ায় ১৮ হাজার ৮শ’ ৮৪, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৫ হাজার ৩শ’ ৮৭, থাইল্যান্ডে পাঁচ হাজার ১শ’ ৯৬, ফিলিপাইনে ৫১ হাজার ৬শ’ ২২ এবং ভারতে ১০ হাজার ১শ’ ৭২ জন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশে এবছরের জানুয়ারি থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে, ২ হাজার ৩শ’ ৫ জন। এটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ, জনবল, অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ যখন যা চেয়েছেন তখন তাই দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থাও নিজ-নিজ অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। মানুষকে সচেতন করার জন্য যা-যা করণীয় তার সব করা হয়েছে। যার সুফল হিসেবে আমরা আজ একটি ইতিবাচক জায়গায় পৌঁছেছি।
রাজধানীতে পরিকল্পিত বাজার স্থাপন সম্পর্কে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে শাক-সবজি, মাছসহ অন্যান্য উৎপাদিত পণ্য ঢাকায় এনে যথাযথভাবে নগরবাসীর নিকট পৌঁছে দিতে ঢাকার চারপাশে পাইকারি বাজার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অপরিকল্পিতভাবে পাইকারি ও খুচরা বাজার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় যানজটসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এজন্য সুবিধাজনক বা নির্দিষ্টস্থানে পাইকারি ও খুরচা বাজার কীভাবে বসানো যায়, সেব্যাপারে ঢাকার দুই মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ‘আমরা আলোচনা শুরু করেছি’।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে অবশ্যই নজর রাখা হবে। কাউকে জোর করে পাঠানো হবে না। তাদের জন্য সুবিধাজনক জায়গা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে, যাতে তারা নিজেরাই আকৃষ্ট হয়ে স্থানান্তরিত হয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘উৎপাদকরা পণ্য বিক্রি করে যাতে লাভবান হয় এবং নগরে বসবাসকারীরাও যাতে সুফল ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়াই আমাদের লক্ষ্য। কীভাবে এই লক্ষ্য পূরণ করা যাবে- সেই পরিকল্পনা করতেই আমাদের আজকের এই বৈঠক।’
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে বসবাসরত মানুষদের একটি বাসযোগ্য ও দৃষ্টিনন্দন শহর উপহার দিতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করুক এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিনসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ, সংশ্রিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা ও সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এসি