টি-টোয়েন্টিতে প্রমাণের অপেক্ষায় নতুন বাংলাদেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:১২ এএম, ৩০ জুলাই ২০২২ শনিবার
সোহানের নেতৃত্বে নতুন এক বাংলাদেশ দল
দুই তারকা পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও টেন্ডাই চাতারাকে ছাড়াই বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট। বাংলাদেশ দলও কয়েকদিন আগে সেখানে পৌঁছেছে তরুণদের নিয়েই।
সিনিয়রদের ছাড়াই দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হাতে থাকবে- এটা প্রমাণের জন্য শনিবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামছে নতুন চেহারার বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় এবং সরাসরি সম্প্রচার করা হবে টি-স্পোর্টস চ্যানেলে।
এই প্রথম এই ফরম্যাটে দেশের সেরা পাঁচ ক্রিকেটার- মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ছাড়াই সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ দল।
২০০৬ সালে ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে অভিষেকের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২৮টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচ খেলে পাঁচটিতে হেরেছে টাইগাররা, জিতেছে ১১টি।
২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেন মাশরাফি। আর এই সিরিজের আগ মুর্হূতে টি-টোয়েন্টি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেন তামিম। অন্যদিকে, আগে থেকেই এই সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আর মুশফিকুর রহিম এবং নিয়মিত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এই সিরিজে দেয়া হয়েছে বিশ্রাম।
আর এমন প্রেক্ষাপটে নুরুল হাসান সোহানকে অন্তবর্তীকালীন অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এ পর্যন্ত ৪৪টি ম্যাচে জয় এবং ৮১টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে শেষ ১৩টি ম্যাচে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। তবে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সব ফরম্যাটেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
যদিও এখনও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমন একটি ফরম্যাট যেখানে বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলতে পারে জিম্বাবুয়ে। অপরদিকে নিজেদের পছন্দের ওয়ানডে ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ম্যাচে জয় আছে বাংলাদেশের।
তবে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা থাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকবে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেললে অনুপ্রাণিত হয় দলটি।
বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘অনেকে এই ফরম্যাটে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলছেন, কিন্তু আমরা কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাচ্ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনও এই ফরম্যাটে নিজেদের প্রমাণ করতে পারিনি। এটা মূলত রিয়াদ-মুশফিককে দল থেকে বাদ দেয়া বা সাকিবকে বাদ দেয়া নয়। আমি মনে করি, কিছু খেলোয়াড়কে পরখ করে দেখতে চাই আমরা। আমরা এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলতে চাই, যা কিছুটা সহজ। আমরা সেই সব নতুন খেলোয়াদের সম্পর্কে ভালো কিছু ধারণা পেতে চাই। সিনিয়র খেলোয়াড়দের সামর্থ্য সর্ম্পকে তো আমরা আগে থেকেই জানি।’
এদিকে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েই এ বছরের আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়ায় আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুয়ে। তবে ইনজুরির কারণে দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি এবং তেন্ডাই চাতারাকে পাচ্ছে না তারা। বাছাইপর্বে দলের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখেন এই দুজন। জিম্বাবুয়ের কন্ডিশন পেসারদের জন্য সহায়ক। তাই মুজারাবানি ও চাতারার অনুপস্থিতি বাংলাদেশ দলের জন্য অনেকটাই স্বস্তির।
দল হিসেবে জিম্বাবুয়ে যতটাই শক্তিশালী হোক না কেন। এই সিরিজের সব ম্যাচে জয়ের দিকেই চোখ বাংলাদেশ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতে হারাতে আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং।’
সোহান আরো বলেন, ‘অবশ্যই আমরা যতটা সম্ভব ম্যাচ জিততে চাই। সবগুলো ম্যাচ জিতলে ভালো হবে। তাই আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ নিয়ে এগোবো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সিরিজের শুরুটা ভালো করা।’
বাংলাদেশ দল:
নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, আফিফ হোসাইন, শেখ মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসাইন, নাজমুল হোসাইন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ ও পারভেজ হোসাইন ইমন।
জিম্বাবুয়ের দল:
ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, রেগিস চাকাভা (উইকেটরক্ষক), তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জংওয়ে, ইনোসেন্ট কাইয়া, ওয়েসলি মাধেভেরে, তাদিওয়ানশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নাইয়ুচি, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও শিন উইলিয়ামস।
এনএস//