ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

শোকের মাস আগস্ট: অস্থির সময়ের আখ্যান

ফারজানা শোভা

প্রকাশিত : ০৮:৪১ এএম, ১ আগস্ট ২০২২ সোমবার

শুরু হল শোকাবহ আগস্ট। বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলিস্যাৎ করার চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র পরিণতি পেয়েছিল ১৯৭৫ এর এই মাসে। ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সদ্য স্বাধীন দেশ ডুবে যায় পরাজিত শক্তির কালো জালে। 

ডিসেম্বর ১৬, ১৯৭১। বাঙ্গালির বিজয়সূর্য দেখা দিয়েছে। এক মাস পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরলেন বঙ্গবন্ধু। ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনঃর্গঠনে । এক দিকে সংবিধান প্রণয়ণ, মন্ত্রীসভা গঠন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ, ভারতীয় সেনা বিদায়, ঘাতক-দালালদের বিচারের মত গুরুত্বপূর্ণ সব রাজনৈতিক কাজ। এদিকে গোকুলে বাড়ছে শত্রুর সম্ভার।

মানুষ ছাড়া পোড়া মাটি চেয়েছিল পরাজিত পাকিস্তান। পরাজয়ের পরও সে আশা ছাড়েনি তারা। বাস্তবায়নে যোগ দেয় মসনদের ক্ষমতালোভী ষড়যন্ত্রকারীরা। স্বাধীনতার মহানায়ককে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে আবারো গোলাম বানানোর নীলনকশায় মেতে ওঠে তারা। 

কিছু কাছের মানুষই যে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে তা কখনো কল্পনাও করেননি জাতির পিতা। তাই বারবার সাবধান করার পরও কর্মে আর চিত্তে এতটুকু ফাটল ধরেনি অমিত সাহসী বঙ্গবন্ধুর। অবশেষে জাতিকে স্তম্ভিত করা সেই কালরাত্রি। ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের রক্তে রঞ্জিত সদ্য স্বাধীন দেশের মাটি। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হত্যা করা হয় পুরো পরিবার ও স্বজনদের।

দেশ থমকে যায়। সামরিক জান্তা আর বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমতার ভাগাভাগি, হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র, পাকিন্তানি চেতনার প্রত্যাবর্তনে উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে দেশ। স্বাধীনতা আর রাষ্ট্রের সাংবিধানিক মূল নীতি ভুলুণ্ঠিত হয়।

কিন্তু স্বাধীনতার চেতনা যেন অজেয় সংশপ্তক। বঙ্গবন্ধুর শেষ উত্তরসূরী দুই কন্যা শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। পিতা আর পরিবার হারানো শেখ হাসিনা ৮১ সালে দেশে ফিরে হাল ধরেন দলের। পিতার আদর্শে পরিচালিত দলকে ক্ষমতায় আনেন। 

দেশ পূনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর যাত্রা ৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেমে গেলেও বর্তমানে তার জ্যেষ্ঠকন্যা তারই দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। 

এসবি/