ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় মামলা, পুলিশ আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৭ পিএম, ১ আগস্ট ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৮:৩৮ পিএম, ১ আগস্ট ২০২২ সোমবার
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ইউপি নির্বাচনে পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আটশ’ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করায় ওই এলাকার পরিবারগুলো গ্রেফতার আতঙ্কে পড়েছে এবং অধিকাংশ পুরুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলার কথা শুনে গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে পুরুষেরা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং বাড়ির নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছেন। সেই পুরুষেরা লুকিয়ে কিছু সময়ের জন্য বাড়িতে আসলেও আবার বাড়ি ছাড়ার সময় নারী ও শিশুরা। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন।
মীরডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা শায়লা আক্তার বলেন, আমরা শুনেছি অজ্ঞাতনামা যে আটশ’ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তাতে পুলিশ যাকে খুশি, যাকে ইচ্ছে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে পারবে। সে কারণে গ্রামে আমরা গ্রেতার আতংকে সময় পার করছি আমরা। আমার কোলের সন্তানের বাবাকে আমি বাড়িতে থাকতে দেই না। বলা যায় না কাকে কখন তুলে নিয়ে মামলায় নাম লেখে দেয়।
আরেক বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, আমার ছোট তিনটা বাচ্চা আর স্বামী নিয়ে সংসার। মামলা আর গ্রেফতারের ভয়ে স্বামী বাড়িতে থাকতে সাহস পাচ্ছেন না। অথচ আমরা নির্বাচনের দিন ঘটনার সময় এলাকাতে ছিলাম না। ভোট দিয়ে আমরা চলে এসেছিলাম। পরের ঘটনাতেও আমরা সেখানে যাইনি। এখন মামলা হয়ছে অনেকজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আমরা অনেক ভয়ে দিন পার করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা দিনমজুর মানুষ। দিন আনে দিনে খাই। একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। এখন অনেকজনের নামে অজ্ঞাত নামা মামলা হয়েছে। কাকে কখন তুলে নিয়ে যায় বলা যায়না। আমি নিজেই অনেক ভয়ে আছি, টেনশনে রাতে ঘুমাতে পারছি না। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাণীশংকৈল উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভি.এফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশের গুলিতে এক শিশুর মাথার খুলি উড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিহত হয়। সে দিনের সেই ঘটনায় পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার বাদি হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করেছে। মামলাগুলোতে অজ্ঞাতনামা আটশ’ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, আমি গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে দিয়ে এসেছি এতে কোন সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হবেনা। অতএব কেউ যেন অকারণে ভয় না পায়। শুধুমাত্র দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
কেআই//