ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

উত্তরায় বিস্ফোরণে ৮ জনের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৭:২০ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২২ রবিবার

রাজধানীর উত্তরা কামার পাড়ার (রাজা বাড়ি) এলাকায় গত ৬ আগষ্ট শনিবার দুপুরে ব্যাটারি চালিত রিক্সার দোকানে চার্যকৃত ব্যাটারিতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট হয়ে ব্যাটারি বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যারেজ মালিক গাজী মাজহারুল ইসলাম সহ ৮ জন দগ্ধ হয়েছিলেন এবং এরমধ্যে ৮ জনেরই মৃত্যু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা য়ায়, উত্তরার কামারপাড়ায় নিহত গাজী মাজহারুল ইসলামের অটোরিক্সা গ্যারেজর পাশাপাশি একটি ভাঙারির দোকান আছে। গ্যারেজে অটোরিক্সা রেখে ব্যাটারির নিয়মিত চার্য দেওয়া হত এবং অটোরিক্সার ব্যাটারিতে কোন সাবধানতা অবলম্বন না করে এসিড পরিবর্তন করা হত।

নিহত মাজহারুলের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শির মতে উক্ত গ্যারেজে ঘটনার দিন অনেকগুলো ব্যাটারি ওভার লোডিং চার্য দেওয়া হচ্ছিল। চার্যকৃত ব্যাটারিতে গ্যারেজ মালিক এসিড পরিবর্তন করছিল এসময় অল্প দুরবর্তিস্থানে অপর দুই কর্মচারী সিগারেট টানছিলেন। ব্যাটারিতে এসিড ঢালবার সময় অসাবধানতাবশত কিছু এসিড বিদ্যুতের তারে গিয়ে লাগে, এসময় বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়ে বিস্ফোরণে গ্যারেজ মালিক গাজী মাজহারুল সহ ৮ জন অগ্লিদগ্ধ হয়। বিস্ফোরণের সময় গ্যারেজে থাকা ১৩টি অটোরিক্সা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয় এবং রক্ষিত অনান্য মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

পাশের ভাঙারির দোকান ঘরে রক্ষিত বিভিন্ন স্থান হতে ক্রয়কৃত ডঃ রাযেস এর জার্মকিল কিল স্প্রের কিছু ব্যবহারিত খালি কৈাটাগুলিসহ অন্যান্য মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলেও অক্ষত থেকে যায়। বিস্ফোরণ ঘটার পর উত্তরা ফায়ার স্টেশনের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম তিনটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

পরবর্তিতে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থল পরদির্শন করে এবং পরিক্ষা নীরিক্ষা করে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হয় যে, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারণে ব্যটারি বিস্ফোরণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গ্যারেজে আগুন লেগে ১৩টি অটোরিক্সাসহ  সকল মালামাল ছিন্নবিচ্ছিন্ন হলেও পার্শ্ববর্তি ভাঙ্গারীর দোকানে রক্ষিত ননএলকহলিক ডঃ রাযেস এর জার্মকিল কিল স্প্রে কৌটাগুলি অক্ষত ছিল।

এদিকে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে  তারা গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার  পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলম তার শ্বশুর রফিককে এবং নূর হোসেন তার ছেলে নাজমুলকে মৃত্যুর আগ মূহুর্তে বলেছে, রিক্সা গ্যারেজের মালিক গাজী মাজহারুল ইসলাম ব্যাটারিতে এসিড পরিবর্তন করছিল , এ সময় অদূরে অপর এক কর্মচারী সিগারেট টানছিল বাকিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিল, হঠাৎ ব্যাটারিতে লাগানো বিদ্যুতের তারে  এসিডের ফোটা লেগে স্পার্কিং হয় এবং মূহুর্তে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। 

নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্যনক্ষম ব্যক্তি চলে গিয়েছে তারা এখর অসহায়, দিশেহারা এবং অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। তারা বিত্তবানদের সহায়তা করার অনুরোধ করেন। ঘটনাস্থলের আশেপাশে স্থানীয়দের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, ১ বছর আগেও একই রিক্সা গ্যারেজে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়।

সম্প্রতি ঘটনায় অটোরিক্সা গ্যারেজ ও ভাঙারির দোকানের মালিকের ভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বুধবার তুরাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।

এসবি/