বঙ্গবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশন অচিরেই: আইনমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫৫ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডকে ষড়যন্ত্রমূলক বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে অচিরেই কমিশন গঠন করা হবেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাঙালির শোকের শ্রাবণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, “যারা বঙ্গবন্ধুর ঘরের পাহারায় ছিল তারাই বেইমানি করেছে। সে কারণেই তারা ঘরে ঢুকতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যদি কোনো আন্দোলন হতো অপজিশন পার্টি থেকে, তাহলেও মানা যেত। ফলে এটাকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলা যাবে না। এটা ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ড।
“বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একটা অবিচ্ছেদ্য এবং যারা তাকে হত্যা করেছে, তারা বুঝতে পেরেছিল যে ব্যর্থ রাষ্ট্র তারা করতে চেয়েছে। যদি তার পরিবারের এক ফোটা রক্ত থাকে তাহলে সেটা তারা করতে পারবে না। এ থেকেই বোঝা যায় এটি পূর্বপরিকল্পিত, ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা।”
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, “জিয়াউর রহমান তো শুরুই করেছিল শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে। তিনি ছিলেন রাজাকার নম্বর ওয়ান। এছাড়াও তার মন্ত্রিসভার অনেকেই আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন। এই গোষ্ঠীর ধারাটা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই জিয়াউর রহমান দেশ শাসন শুরু করেছিলেন।”
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশন অচিরেই হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কমিশনের রূপরেখা তৈরি করেছি। ২০১৯ সালে যখন প্ল্যান করলাম, তখন করোনার আক্রমণ শুরু হলো। এটার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক্ষেত্রে তার আদেশ শিরোধার্য। তিনি হয়ত পরিমার্জন করবেন, সেজন্য এর আগে আমি এটি জনসম্মুখে আনতে চাই না।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের ঘটনায় অত্যন্ত শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। অনেক শক্তিশালী লোকের নাম চলে আসবে তদন্তে। খেয়াল রাখতে হবে এমন কমিটি গঠন করতে হবে, যারা চোখ রাঙানোকে উপেক্ষা করতে পারবে।”
রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যা একটি গণহত্যার শামিল। এই হত্যাকাণ্ড তো হঠাৎ করে ঘটেনি। এর একটি বিশাল প্রেক্ষাপট ছিল। সেই গোষ্ঠী এখনও এ দেশে রাজনীতি করছে। সেই গোষ্ঠী এখনও সজাগ রয়েছে। পাকিস্তানিরা বলেছিল, ৭১’ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ তারা নেবে। সে রূপরেখা ধরেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে।”
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু যখন ছাড়া পেলেন কারাগার থেকে, তিনি লন্ডন পৌঁছালেন, সেখানে তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন, আর ভালোবেসেই তাকে জীবন দিতে হয়েছিল।”
আলোচনার সভাপতি সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতা ধারণ করতে না পারলে কোনো কিছুই টিকবে না।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধকে সম্মিলিতভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
এএইচএস