ঢাকা, শনিবার   ২৯ জুন ২০২৪,   আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

ববির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

ববি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:০২ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০৩:০৩ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২ বুধবার

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্তোলন করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, লোকবল সংকটে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়, যা অচিরেই কেটে যাবে।

এই অফিসে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, নম্বরপত্র ও সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে ভোগান্তিসহ নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্তোলনের জন্য দিনের পর দিন কর্মকর্তাদের টেবিলে ঘুরতে হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে জরুরি প্রয়োজনে মার্কশিট কিংবা সনদ পেতে চরম ভোগান্তির শিকার তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মিশাল বিন সলিম অভিযোগ করে বলেন, “প্রতিনিধি হিসেবে আমার সনদ এবং ফাইনাল মার্কশিট তুলতে গিয়েছিল এক বন্ধু। সনদ বিভাগ থেকে প্রথমে জানাল, বন্ধুর আইডি কার্ডের ফটোকপিতে আমার এবং চেয়ারম্যান স্যারের সাইন লাগবে। সেটা নিয়ে যাওয়ার পর প্রিন্ট অ্যাপ্লিকেশন রিজেক্ট করে দিয়ে বলল হাতে লেখা অ্যাপ্লিকেশন লাগবে। তা আবার কুরিয়ারে পাঠানোর পরে বলল আরও দুইটা সাইন দিতে হবে অ্যাপ্লিকেশনে।”

“এত বিড়ম্বনার পরে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বরিশাল গিয়ে সনদ তুলতে গিয়ে কাগজ দেয়ার সময় একবারও চেক করল না যে আমি সেই মানুষ কিনা। পেমেন্ট রসিদ দিলাম, সনদ এবং মার্কশিট দিয়ে দিল। কিন্তু নিয়ম মেনে প্রতিনিধির কথা জানানোর কারণে বন্ধুর এত ঘুরতে হলো।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সনদ বিভাগের এ অব্যবস্থাপনার অভিযোগের বিষয়টি নতুন নয়। মার্কশিট ও সনদে বানান ভুল, বিভাগে এসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া কিংবা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পরে ঘণ্টা। কখনও কখনও পাওয়া যায় না কর্মকর্তাদের, পেলেও ধীর গতিতে কর্মসম্পন্ন, মাঝে মধ্যে কর্মকর্তাদের অশোভন আচরণের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, তার মার্কশিটে ফ্যাকাল্টি এলএলবির জায়গায় বিবিএ লিখে দেয়া হয়েছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ইসমাইল হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ইয়ারকে সেমিস্টার আর সেমিস্টারকে ইয়ার নিয়ে তিনবার ঘুরিয়েছে।

এ বিষয়ে ওই বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রায় নয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা দেয়ার জন্য একটি মাত্র ডেস্ক, লোক মাত্র দুজন। যে কারণে শিক্ষার্থীদের চাপ সামলানোতে মাঝেমধ্যে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া বিদ্যুৎ সংকটে রেজাল্ট সিট তৈরিসহ অন্যান্য কাজে বিলম্ব হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ উল্লাহ মোহাম্মদ ফয়সাল জনসংকটের কথা সরাসরি অস্বীকার করেন। বানান ভুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক কাজ করলে দু-একটি ভুল হতেই পারে। তবে সেটি আমাদের কাছে পরবর্তীতে নিয়ে এলে আমরা ঠিক করে দেই। 

এছাড়া শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অভিযোগের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে বলেন, এরকম কিছু হলে শিক্ষার্থীরা অবশ্যই আমাকে এসে জানাত। আর বিপ্লব নামে যে ছেলেটি এখানে আছে ওনার বিষয়ে কয়েকবার অভিযোগ পেয়েছি, অতিদ্রুতই ওনাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

এএইচ