ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ঠিকাদারকে দায়ী করে বেঁচে যেতে চাইছে সংশ্লিষ্টরা (ভিডিও)

আতিক রহমান পূর্ণিয়া, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৯ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২ বুধবার | আপডেট: ১০:০৩ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২ বুধবার

গার্ডার পড়ে পাঁচ জনের মৃত্যর ঘটনায় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায় থেকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ঘটনার জন্য শুধুমাত্র ঠিকাদারকে দায়ী করে বেঁচে যেতে চাইছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। 

ছয় মাসে বিআরটি প্রকল্পে গার্ডার ধসে পরার ঘটনা ঘটেছে তিনটি। ১৫ জুলাই গাজীপুরে গার্ডার ধসে মারা যান এক শ্রমিক। অপর ঘটনায় চীনা নাগরিকসহ পাঁচজন আহত হয়েছিলেন। এসব ঘটনার কোন তদন্ত হয়নি। 

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি অনুযায়ী গার্ডার বসানোর সময় বেশকিছু শর্ত মানার কথা। যার মাঝে আছে আলাদা লোক দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, হুইসেল এবং লাল কাপড় টাঙ্গানো, গার্ডার বসানো এলাকা সম্পূর্ণ ঢেকে দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশকে জানিয়ে রাখা। এর কোনটিই উত্তরায় মানা হয়নি।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শর্ত মানছে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন তারা কি তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন? কোথায় ছিলেন তারা?

বুয়েট অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, “অনেকটা অবহেলাজনিত একটা হত্যাকাণ্ড হলো। সেখানে নিরাপত্তার নুন্যতম যে ব্যাকরণ থাকার কথা সেটি ছিল না। যিনি ক্রেন অপারেট করছিলেন তার দক্ষতা-অভিজ্ঞতা ছিল কিনা, তার লাইসেন্স ছিল কিনা সেটি ভেবে দেখতে হবে। সর্বোপরি তাকে তদারকি করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আছে, তাকে তদারকি করার জন্য বাস্তবায়নকারি সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ আছেন। পাশাপাশি সুপারভিশন কনসালটেন্ড তারা কিন্তু আছেন, এই সুপারভিশন করার জন্যই তারা প্রতিমাসে অর্থ পাচ্ছেন। সুপারভিশন না করে টাকা নিবেন। এখানে অনেকগুলো জায়গা ব্যর্থ হয়েছে।”

মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব তাদের প্রাথমিক তদন্তে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দায়ী বলে সংবাদ সন্মেলনে জানান।

সড়ক বিভাগের প্রাথমিক তদন্ত করেছেন ঐ বিভাগের বিআরটি প্রকল্প সমন্বয়ক নীলিমা আক্তার। অপর দুই সদস্যের একজন প্রকল্পের কর্মকর্তা এবং অপরজন পুলিশ সদস্য। ফলে তদন্ত ঠিকভাবে হয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, “তদন্ত কমিটির একটি নিরপেক্ষ ফর্মেশন থাকতে হয়। কোনভাবেই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এমন ব্যক্তি থাকা উচিত নয়।”

এত বড় দুর্ঘটনার পর তাদের লোকজনের দায় নিয়ে কি ভাবছে বিআরটি কর্তৃপক্ষে? জানতে চাইলে  সদুত্তর মেলেনি ।

বিআরটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, “সবকিছু তো এই রিপোর্টে কভার করবে না। এক একটা ভিন্নভাবে দেখতে হবে। এখন দুর্ঘটনার বিষয়ে কনসালটেশন হবে। “

এবারের ঘটনায় সঠিক তদন্ত ও দায়িদের শাস্তি না হলে আরও দুর্ঘটনার আশংকা বিশেষজ্ঞের।

এএইচ