এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ শুধুই সাকিবের!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৪১ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার
শেন ওয়াটসন ও সাকিব আল হাসান
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন এশিয়া কাপ ও অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একক রাজত্ব করবেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
সম্প্রতি এমনটাই মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন।
তার মতে, ‘আসন্ন এই দু’টি বড় ইভেন্টে অধিনায়ক হিসেবে দারুণ পারফরমেন্স করবেন সাকিব। তার অধীনে নতুন করে উজ্জীবিত হবে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল। এমনকি ব্যাট-বল হাতেও রাজত্ব করবেন সাকিব নিজে। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে সাকিব আধিপত্য বিস্তার করতে না পারাটা হবে অবাক করার মতো ঘটনা।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ শক্তিশালী হলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স খুব একটা ভালো নয়, ধারাবাহিক নয়। তাই টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ। যার প্রেক্ষিতে গত জুনে তৃতীয়বারের মত বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান সাকিব। আর চলতি মাসে টি-টোয়েন্টি দলেরও নেতৃত্ব দেয়া হয় সাকিবকে।
টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব পেয়েই, বড় দু’টি পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে সাকিব আল হাসান। আগামী ২৭ আগস্ট থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর। আগামী অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের এশয়া কাপ হচ্ছে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে। এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় দু’টি আসরের পরীক্ষার মুখোমুখি সাকিব।
আসন্ন এই দু’টি পরীক্ষায় সাকিব যদি দাপট দেখাতে না পারেন, তবে অবাকই হবেন ওয়াটসন।
আইসিসির রিভিউতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিবের প্রশংসা করে অজি অলরাউন্ডার বলেন, ‘সাকিবের মতো একজন যোগ্যতাসম্পন্ন নেতা যখন দায়িত্ব পেয়েছে, তখন দলগতভাবে আরও সুসংগঠিত হবে বাংলাদেশ। সে খুবই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে সে আগেও নেতৃত্ব দিয়েছে। এমনকি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও নেতৃত্ব দিয়েছে, বিশেষ করে বিপিএলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাপের মধ্যে সাকিবের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দুর্দান্ত। তারও প্রমাণ করার বিষয় আছে। যখন কোনো ক্রিকেটারের নিজেকে প্রমাণের ক্ষেত্র থাকে এবং ভালো করার ক্ষুধা থাকে, তখন দাপুটে ক্রিকেট খেলতে থাকে তারা। সাকিব এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে আধিপত্য বিস্তার করতে না পারলে আমি খুবই অবাক হব।’
একজন শীর্ষ অলরাউন্ডার হিসেবে ১৪ বছর যাবত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন সাকিব। তাই শারীরিকভাবে কতটুকু চাপ যায়, তা ভালোই জানেন ওয়াটসন। ঠিক এমনই অবস্থা যাচ্ছে সাকিবের।
ওয়াটসন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, অলরাউন্ডারের কাজটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। যখন আপনি দিনের পর দিন খেলবেন, তখন নিজের যত্ন নিতে হয় এবং শক্তি সংরক্ষণ করতে হয়। আর ব্যাটিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে দীর্ঘ সময় যাবত শারীরিক ও মানসিক শক্তি বজায় রাখতে হয়।’
প্রাক্তন এই অজি ক্রিকেটার আরও যোগ করে বলেন, ‘সাকিব যা করছেন সেটা অনেক কঠিন। বাইরে থেকে মনে হতে পারে একজন স্পিনিং অলরাউন্ডার, বাঁ-হাতি স্পিনারকে হয়তো খুব বেশি শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় না। কিন্তু উপমহাদেশের কন্ডিশনে অনেক বোলিং করছে সে। আবার দলের ব্যাটিং লাইনআপেও মূল ভূমিকা পালন করছে সে।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গন ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে অনায়াসে খেলে যাচ্ছেন সাকিব। ৩৫ বছর বয়সেও, ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে সাকিবের খেলাটা মুগ্ধ করেছে ওয়াটসনকে। ভবিষ্যতে সাকিবের মত তিন সংস্করণে কাউকে খেলতে দেখা যাবে কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান ওয়াটসন।
ওয়াটসন বলেন, ‘তিন ফরম্যাটে সাকিবকে খেলতে দেখা বিশেষ কিছু। এখনকার সময়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটসহ যে পরিমাণ খেলা হয়, সাকিবের মতো তিন ফরম্যাটেই খেলে যাওয়া এবং এমন সাফল্য পাওয়া বিরল ঘটনা হতে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৫ বছর ধরে ব্যাট হাতে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩০-এর বেশি গড় এবং বল হাতে ৩০-এর নিচে গড় ধরে রাখা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’
৪১ বছর বয়সী এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ৩০৭টি ম্যাচ খেলে ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৬৭টি হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রায় ৩৫ গড়ে ১০ হাজার ৯৫০ রান করেছেন। ২০০২ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে গেছেন তিনি।
এনএস//