স্বাধীনতার দিনেও যুদ্ধ করছে ইউক্রেনিয়ানরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২২ বুধবার | আপডেট: ১২:৫৬ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২২ বুধবার
রুশ নেতৃত্বাধীন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের ৩১ বছর উদযাপন করছে ইউক্রেন। এ বছর ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসটি এমন এক তারিখে উদযাপন হচ্ছে, যেদিন দেশটিতে রাশিয়ার হামলার ছয়মাস পূর্ণ হয়েছে। যে রাশিয়া থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন হয়েছিল দেশটি, এখন ৩১ বছর পর সেই রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের।
এবার ইউক্রেনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে অনেকটা ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে। জলে, স্থলে বা আকাশপথে রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় রাজধানী কিয়েভে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে কার্ফু জারি করা হয়েছে। রাশিয়ার যেকোনো হামলার ব্যাপারে নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি।
দক্ষিণাঞ্চলীয় খারসন শহরে রাশিয়ার সৈন্যদের বিরুদ্ধে ভারী লড়াই করে যাচ্ছে ইউক্রেনের সৈন্যরা। অন্যদিকে রবিবার রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ক্রাইমিয়ায় একটি ইউক্রেনিয়ান ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এই যুদ্ধে এর মধ্যেই হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে, ইউক্রেনের প্রায় দেড় কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অসংখ্য শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউক্রেনের এই যুদ্ধ প্রভাব ফেলেছে বিশ্বের অর্থনীতিতেও।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল ইউক্রেন।
মঙ্গলবার ৬০টি দেশের প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যদের নিয়ে ক্রাইমিয়া বিষয়ক একটি অনলাইন সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে তারা পুরো উপদ্বীপ থেকে রাশিয়ান বাহিনীকে বিতাড়িত করবেন। সেজন্য আগে অন্য কোন দেশের সঙ্গে তারা পরামর্শও করবেন না।
এদিকে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই যুদ্ধে তাদের প্রায় আট হাজার সামরিক সদস্য নিহত হয়েছে।
রাশিয়ার কত সৈন্য নিহত হয়েছে, তা তারা জানায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা ধারণা করেন, এ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রায় ১৫ হাজার সামরিক সদস্য নিহত হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া, তাকে তারা বিশেষ সামরিক অভিযান বলে বর্ণনা করেছিল। ইউক্রেনকে ‘নাৎসি’ মুক্ত করতে তাদের ওই অভিযান বলে দাবি করেছিল।
ইউক্রেন বলেছিল, কোনরকম উস্কানি ছাড়াই রাশিয়া সাম্রাজ্যবাদী হামলা করেছে।
তবে এ যুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন খবর হচ্ছে, ইউক্রেনের স্বাধীনতার আর রাশিয়ার হামলার ছয়মাসের দিনে বুধবার ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন, প্রায় তিনশো কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষায় সহায়তা করবে।
এই অর্থ দিয়ে ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র কিনতে ব্যবহার করা হবে। তবে সেসব অস্ত্র হয়তো আগামী এক অথবা দুই বছরের মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে না।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে প্রায় এক হাজার কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এসএ/