ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

ভুল চিকিৎসায় জীবন সংকটাপন্ন, জরিমানা দিতে হল রোগীকেই!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৭ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০৯:৫৭ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২২ বুধবার

ছোট্ট একটি অপারেশন, যার জন্য চিকিৎসকের প্রয়োজন ছিল মাত্র আধা ঘণ্টার, আর রোগী বাসায় ফেরার কথা ছিল তিন ঘণ্টার মধ্যেই। কিন্তু চিকিৎসকের ভুলে রোগীর জীবন হয়ে উঠে সঙ্কটাপন্ন। দায় না নিয়ে উল্টো হাসপাতালের আকাশ সমান বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় রোগীর স্বজনদের। 

সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর শ্যামলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে।

দীর্ঘদিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন রাজধানীর ইন্দিরা রোডের বাসিন্দা মেহবিশ জাহান। শরণাপন্ন হন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি এন্ড হেপাটোলজি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক মো. সামসুল আরিফিনের।

মেহবিশের বাবা শেখ জসিম একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, ‘প্রথমে ৩১ জুলাই বিভিন্ন পরীক্ষা করার পর ৩ (আগস্ট) তারিখে রিপোর্ট দেখে ডা. সামসুল আরিফিন জানান, অগ্নাশয়ে সিস্ট আছে। সেটি অপসারণ করতে হবে। একইসাথে জানান, এন্ডোসকপির মাধ্যমে করলে এটি নিরাপদ হবে।

‘অপারেশনের জন্য (৯ আগস্ট) নির্ধারিত দিনে আমার মেয়েকে নিয়ে আসলে ডা. শামসুল আরিফিন সিস্ট অপসারণের পরিবর্তে কেটে ফেলেন ধমনী। এরপর শুরু হয় রক্তপাত।

‘অবস্থা বেগতিক দেখে মেহবিশকে আইসিইউতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরে আরেক চিকিৎসক ডা. ইমরুল সিমিত সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও ঝুঁকি নিয়ে ধমনী সেলাই করেন। এ সময় মেহবিশকে দিতে হয় ৯ ব্যাগ রক্ত। এ যাত্রায় কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে যায় আমার মেয়ে।’

এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেহবিশের বাবা শেখ জসিম।

মেহবিশের শ্বশুর মো. আরকান উল্লাহ শ্যামল একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, ‘অপারেশন হওয়ার কথা ছিল সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টার মধ্যে, সেখানে আড়াই ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর আমরা যখন কোনও খবর পাইনি, হঠাৎ তারা খবর দেন, রোগীর অবস্থা ভালো নয়, আইসিইউতে নিতে হবে। ডা. আরিফিন তার ইমেজ রক্ষায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মেহবিশকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছিলেন।’

মেহবিশের বাবা শেখ জসিম অভিযোগ করে আরও জানান, অপারেশনের জন্য ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে তাদের ভুল চিকিৎসার বিল বাবদ চার লাখ সাতান্ন হাজার টাকা আদায় করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অপারেশনের আগের ও পরের কাগজপত্র যাচাই করে মেলে তাদের অভিযোগের সত্যতা। যে চিকিৎসা দেয়ার কথা ছিল, সেটি দেওয়া হয়নি। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথাতেও পাওয়া যায় অভিযোগের সত্যতা।

বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আরিফিন এবং ওই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী আল ইমরান চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এমএম/ এএইচএস