হেপাটাইটিস সি-তে আক্রান্ত ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, বিপর্যয়ের শঙ্কা
শিউলি শবনম
প্রকাশিত : ০৭:৩৬ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:৪৬ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার
দেশে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস সংক্রমণ। বর্তমানে ২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এই ভাইরাসে আক্রান্ত। বাংলাদেশি নাগরিকদের তুলনায় সংক্রমণ হার ১৮ গুণ বেশি। দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে, ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দেশের স্বাস্থ্য খাতে চরম বিপর্যয় নামার শঙ্কা বিশেষজ্ঞের।
রোহিঙ্গাদের মাঝে ‘সি’ ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ প্রবণতা নিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে ৩টি গবেষণা চলেছে।
২০১৯ সালে ফোরাম ফর দ্য স্টাডি অব দ্য লিভার বাংলাদেশের গবেষণায় ১৩ শতাংশ রোহিঙ্গার মধ্যে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত হয়। সম্প্রতি ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের গবেষণায় এই হার ১৮ শতাংশ বলে উঠে আসে। অর্থাৎ বর্তমানে দেশে অবস্থান করা ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ২ লাখের বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে পাওয়া হেপাটাইটিস সি’র চিত্র-
-
প্রতি ৫ জন প্রাপ্ত বয়স্ক রোহিঙ্গার মধ্যে আক্রান্ত ১ জন
-
প্রতি ৪ জন নারীর মধ্যে আক্রান্ত ১ জনের বেশি
-
নারী আক্রান্ত ২৬ শতাংশ
-
পুরুষ আক্রান্ত ১৮ শতাংশ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার কোথাও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতো এত উচ্চ মাত্রার হেপাটাইটিস সি’র সংক্রমণ নেই। বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে এই হার ১ শতাংশের নিচে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে হেপাটাইটিস সি সংক্রমণের চিত্র-
-
বাংলাদেশ : ০.৬
-
ভুটান : ০.৪৭
-
ভারত : ০.৫৬
-
নেপাল : ০.৪৭
-
পাকিস্তান : ৪.৮
-
শ্রীলঙ্কা : ০.২৮
-
আফগানিস্তান : ০.৭
তথ্য সূত্র: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা
হেপাটাইটিস সি অনেকটা নীরবে দীর্ঘদিন ধরে মানব শরীরের মধ্যে থেকে যকৃত বা লিভারের ক্ষতি করে থাকে। সচেতন না হলে মরণঘাতী এই ভাইরাস বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএসএমএমইউ-এর লিভার বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
এই লিভার বিশেষজ্ঞের মতে, সঠিক সময়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা না হলে আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে চরম বিপর্যয় নামবে।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ বাড়ায় সতর্ক হচ্ছে সরকার। রোহিঙ্গা থেকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তারও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (সিডিসি) ডা. অনিন্দ্য রহমান।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সরকারকে আরো জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনএস//