ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫,   ফাল্গুন ৩০ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৬:১৩ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২২ শুক্রবার

রাজশাহীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকে ছবি দেয়ায় প্রধান শিক্ষিকা তাকে এ শাস্তি দিয়েছেন। একইসঙ্গে তার ফোনটিও কেড়ে নেন তিনি। 

সম্প্রতি পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটে এমনই ঘটনা।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসী বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠান। এ সময় প্রধান শিক্ষিকার স্বামী শাহ নেওয়াজ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি (শাহ নেওয়াজ) মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়টির জমিদাতা আব্দুল আজিক। তাদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষিকা ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করান।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. রুনা লায়লাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী রোববার প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসী বলেন, ‘ওই শিক্ষিকা অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল লাগিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে মেয়েটিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ মানুষ কথা বলছেন। ভিডিওটি সহকারী শিক্ষিকা তার নিজের ফেসবুকের স্টোরিতে দিয়েছেন।’

কান ধরে ওঠবস করানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কান ধরে ওঠবস করাননি। সহকারী শিক্ষিকা যে অপরাধ করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আওতায় পড়ে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য এখন মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন।

মামলা কেন করেননি- জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, মেয়েটির স্বামী মারা গেছে। তার প্রতি অনুকম্পা দেখিয়ে তিনি মামলা করেননি।

যোগাযোগ করা হলে ওই সহকারী শিক্ষিকা বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষিকার মাথা জোড়া লাগিয়ে কোনো ভিডিও দেননি। তিনি প্রধান শিক্ষিকার বান্ধবীর সঙ্গে তোলা সুন্দর, ভদ্র একটি ছবি ফেসবুক স্টোরিতে দিয়েছিলেন। ওই ছবি প্রধান শিক্ষিকা নিজেই হোয়াটস অ্যাপে তাকে দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সে সময় প্রধান শিক্ষিকা তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন। গত রোববার তিনি বিদ্যালয়ে এলে একজন শিক্ষিকা ছবি দেয়ার বিষয়টি বলে দেন। সেদিনই প্রধান শিক্ষিকা তার ফোনটি কেড়ে নেন। এখনো ফেরত দেননি। ছবি দেয়ার অপরাধে বুধবার তাকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। তাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এনএস//