ঘুষের ২৫ লাখ টাকাসহ আটক বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তা বরখাস্ত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৪০ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২২ রবিবার
২৫ লাখ টাকাসহ আটক বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খন্দকার মুকুল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (২৮ আগস্ট) বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আব্দুল হাকিম তাকে বরখাস্ত করেন।
কাস্টম সূত্রে জানা যায়, ২৫ লাখ টাকাসহ বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খন্দকার মুকুল হোসেনকে গত ২৬ আগস্ট একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা যশোর বিমানবন্দর থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে সঙ্গে থাকা টাকার কোন বৈধতা দেখাতে না পারায় তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার বিকালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বেনাপোল কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার আবদুল হাকিম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের স্বার্থে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খন্দকার মুকুল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি তদন্ত কমিটি করেছেন। এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আবদুল হাকিম আরও বলেন, ‘মুকুল হোসেনের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ওই টাকা পাচারের উদ্দেশে তিনি বিমানবন্দরে নিয়েছিলেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। খন্দকার মুকুল হোসেনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি বেনাপোল কাস্টম হাউসে কর্মরত।
বেনাপোল কাস্টম হাউজ সূত্রে জানা গেছে, মুকুল ঢাকায় তার নিজ বাড়ি টাঙ্গাইল যাওয়ার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে যশোর বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় যাওয়ার সময় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাকে আটক করেন। তার কাছ থেকে একটি ব্যাগে ২৩ লাখ এবং প্যান্টের পকেটে ২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
কাস্টমসের একটি সূত্রে জানা যায়, বিপুল পরিমাণ এ টাকা তার নয়। একজন কর্মকর্তার টাকা ঢাকায় পৌছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ওই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের। কিন্তুু এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে ২ দিন ধরে বেনাপোল কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন দিলেও কেউ ধরেনি। অবশেষে ২ দিন পর রোববার টাকাসহ কাস্টমস কর্মকর্তা আটক ও বরখাস্তের বিষয়টি তারা স্বীকার করেন।
এদিকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমসে ঘুষ ছাড়া কোন ফাইল ছাড়েন না কাস্টমস কর্মকর্তারা। কেউ ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা আর ঘুষ বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ায় গত ১১ বছর ধরে বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ হচ্ছে না। টাকা আটকের ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
কেআই//