সৌদির শ্রম বাজার অস্থিতিশীল, বাড়ছে হেনস্তার ঘটনা (ভিডিও)
আতিক রহমান পূর্ণিয়া, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০১:৩৩ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২২ বুধবার
সম্ভাবনাময় সৌদি আরবের শ্রম বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে সুবিধালোভি কিছু গোষ্ঠি। দুই দেশের অসাধু কিছু ব্যবসায়ী মোটা টাকায় শ্রমিক নিয়ে গেলেও ঘটছে ব্ল্যাকমেইল ও হেনস্তার ঘটনা। সংকট সমাধানে জনশক্তি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কাজ করলেও মেলেনি সমাধান।
বাংলাদেশের শ্রমবাজার হিসাবে সৌদি আরব একটি বড় সম্ভবনার দেশ। সে দেশে বাংলাদেশের শ্রমিক আছেন ৩০ লাখ। ২০২১-২২ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে দেশটি থেকে। গেল এক বছরে সৌদিতে নতুন করে শ্রমিক গেছেন ৬ লাখ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে যারা যাচ্ছেন তারা কতটা ভাল আছেন? সেকথা জানালেন সৌদি ফেরত যুবক।
সৌদি ফেরত শ্রমিক আব্দুল হাই বলেন, “যাওয়ার পর একটা রুম দিয়েছে, যেখানে ৪ জন থাকার কথা সেখানে ৯ জন ছিলাম। কোন কোন রুমে ১৩-১৪ জনও ছিল।”
প্রবাসী শ্রমিকদের পাশাপাশি দেশীয় এজেন্টদেরও ব্ল্যাকমেইল ও হেনস্তার ঘটনা ঘটছে।
রুবেল সৌদি আরবে দুইশত শ্রমিক পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু শ্রমিকরা সেদেশে যাওয়ার পর তাদের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে আটকে রাখে সৌদি এজেন্ট, যারা কফিল বলে পরিচিত। চাকরিও দেন মূলত তারাই। অন্যদিকে শ্রমিকদের পরিবার দেশে চাপ দিতে থাকে রুবেলকে।
হোপ ২১ লিমিডেটের এমডি মকবুল আহমেদ পাটোয়ারি রুবেল বলেন, “কোম্পানির কাজ নেই তখন আমি ওখানে গেলাম। কফিলের সঙ্গে বৈঠক করার পর বললো বিল আটকে গেছে, ব্যাংকের সমস্যা রয়েছে তাই খাবারসহ কিছুই দিতে পারবো না।”
শ্রমকিদের এই দূরবস্থার পেছনে দেশের কিছু মধ্যস্বত্ত্বভোগী এবং সৌদি আরবের ব্যাবসায়ীরা দায়ী বলে মনে করেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
আল ফারা গ্রুপের চেয়ারম্যান জাকের আহমেদ বলেন, “একটার পর একটা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু সবকিছু পসিবল হচ্ছে না।”
আদম ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ বলেন, “সৌদি কোম্পানিগুলো যে ওয়ার্কার নিচ্ছে তাদের আকামা করে দিচ্ছে না। ওরা চিন্তা করে এই ছেলেটা নতুন সে কাজে থাকবে বা থাকবে কিনা এ নিয়ে দিধাদ্বন্দ্বে থাকে।”
দেশীয় শ্রমিক এজেন্টদের এসব সমস্যা সমাধানে জনশক্তি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটি কাজ করলেও বেশিরভাগই সুরাহা হয়নি।
বিএমইটি মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, “বিগত দুই-তিন মাস একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সৌদি আরব যাচ্ছে। আগে ছিল কোম্পানিতে সরাসরি নিয়োগ এখন স্থানীয়ভাবে সাপ্লাই কোম্পানি বা আরেকটা মিডেলম্যান তৈরি হয়েছে। যারা লোক নিয়ে নিজে নিয়োগ না দিয়ে অন্য কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করছে। যখন অন্য কোম্পানিতে হস্তান্তর হয়ে গেল তখন তার চুক্তিটা অনেকটা মূল্যহীন হয়ে গেল। এটা সৌদি আরবের কর্মসংস্থানের একটা নতুন ডাইমেনশন, নতুন একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।”
সৌদি শ্রমবাজারে অসন্তোষের কারণে অনেকে সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো থেকে মালয়শিয়া এবং ওমানের দিকে ঝুঁকছেন বেশি।
এএইচ