মেগা প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় নতুন যুগে দেশ (ভিডিও)
মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪৯ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১২:৫০ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার
বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ ও চালুর ধারাবাহিকতায় দেশ প্রবেশ করছে নতুন যুগে। মেগা প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই যোগাযোগ ও পরিবহন খাতের। আছে, সরাসরি অর্থনীতি ও শিল্পায়নে যুক্ত অবকাঠামোও। সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক সুফল ঘরে তোলার সময়- বলছেন, বিশ্লেষকরা।
যোগাযোগখাতের বৃহৎ অবকাঠামো যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু বদলে দিয়েছে উত্তরের অর্থনীতি, বিলুপ্ত হয়েছে মঙ্গা।
অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার জন্য আশীর্বাদ পদ্মাসেতু। যা জিডিপিতে রাখছে এক দশমিক দুই-তিন শতাংশ অবদান।
আগামী বছরের জুনে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে রেলও। ফরিদপুরের ভাঙা জংশন থেকে যশোর কিংবা পায়রা, বরিশালে ট্রেন চলা সময়ের ব্যপারমাত্র।
পদ্মার সড়ক ও রেল যুক্ত হবে ট্রান্সএশিয়ান-করিডোরে। অভ্যন্তরীণের পাশাপাশি আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারেও সহায়ক হবে এসব প্রকল্প।
পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, “কোন এক সময়ে চায়না থেকে ইউরোপিয়ান গুডস ট্রেন যাচ্ছে। আমরা একটা মিসিং লিংকে ছিলাম। মিসিং লিঙ্কে আছে বার্মা। এটা যদি যোগ করা যায় তাহলে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া থেকে ট্রেন ইউরোপে যেতে পারে। এটা তো এখন হবে না কিন্তু আমরা এই প্রভিশনটা রাখলাম।”
পদ্মা রেল লিংক প্রকল্প ম্যানেজার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, “যেভাবে কাজ চলছে আশা করি মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। একটা লাইন যাবে ফরিদপুর হয়ে আরেকটা যাবে যশোর-খুলনায়। আমরা অপশন রেখেছি আরও যে চারটি লাইন বাকি থাকবে তা পায়রা বন্দর-বরিশাল-পটুয়াখালী রুটে চলে যাবে।”
বিসিআইএম ইকোনমিক করিডোরে যুক্ত হবার পরিকল্পনায় চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে গুনধুম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণও প্রায় শেষ।
অর্থনীতির বিশ্লেষক মাইনুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে অভুতোপূর্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি আশাপাশের দেশগুলোর তুলনা করি তাহলে পার কেপিট্যাল রোড আমাদের গ্রামাঞ্চলে যেটা তৈরি হয়েছে এটা ঈর্ষণীয়। অন্যান্য দেশে কিন্তু সেই ফ্যাবরিকটা নাই। প্রতিটা গ্রাম কানেক্টেড মার্কেট একসেস পাচ্ছে।”
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, মীরেরসরাই বঙ্গবন্ধু ইকোনমিক জোন বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে।
সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, “এই অবকাঠামোগুলোর একটা ভাল দিক হলো এগুলো বিনিয়োগ বাড়াতে সাহায্য করবে। আর বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে। সেটি হলে শুধু দেশের ভেতরেই শুধু কানেক্টিভিটি বাড়বে না আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি যেমন পদ্মা সেতুর রেল চালু হলে কলকাতার দূরত্ব অর্ধেক হয়ে যাবে। নদী পথে অবকাঠামোগুলো শেষ হলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।”
উন্নয়নে প্রাণের সঞ্চার হচ্ছে মোংলা বন্দরে। উৎপাদনে আসছে মেগা প্রকল্প রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো আইকনিক অবকাঠামোও।
শুধুর প্রসারি পরিকল্পনাকে মাথায় নিয়ে একেকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। স্বাধীন পরে বাংলাদেশে অনেকগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসকল মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে এবং যেগুলো জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সেগুলো শুধু দেশের মানুষের চাহিদাকে পূরণ করবে না পুরো অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য একটি বড় কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করছে বাংলাদেশকে। আর সেই সুযোগটা যদি বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে তাহলে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা তা আরও তরান্বিত হবে।
এএইচ