দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাতে চায় নিউজিল্যান্ড
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৮:৫৪ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার
ট্রফি হাতে দুই অধিনায়ক
প্রায় ৩৯ বছর আগে সেই ১৯৮৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। এরপর আর কখনও দ্বিপাক্ষীক বা অন্য কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে পারেনি কিউয়িরা।
এবার দীর্ঘ অপেক্ষার পালা ঘোঁচানোর লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করছে নিউজিল্যান্ড। তবে সিরিজটি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায় আগের রেকর্ড ধরে রেখে সব ম্যাচ জিততে মরিয়া অস্ট্রেলিয়া।
কেয়ানর্সে এদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি।
১৯৮০ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে খেলে নিউজিল্যান্ড। সেটি ছিলো ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচ। এরপর ১৯৮৩ সালে আবারও ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলো নিউজিল্যান্ড। আর ঐ বছরই ত্রিদেশীয় সিরিজের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচের একটি সিরিজ খেলেছিলো কিউয়িরা। যেটা জিতেছিলো সফরকারীরা।
তবে দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম চ্যাপেল-হ্যাডলি নামে দুই ম্যাচের দ্বিপাক্ষীক ওয়ানডে সিরিজ খেলে নিউজিল্যান্ড। সিরিজটি ড্র হয়। এরপর দু’দলের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজ হলেও সবগুলোতেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
আর সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৩ মার্চ, সিডনিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। করোনার কারণে প্রথম ম্যাচটি ফাঁকা গ্যালারিতেই অনুষ্ঠিত হয়। ঐ ম্যাচটি ৭১ রানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ঐ ম্যাচের পর করোনায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হবার উপক্রম হওয়ায় সিরিজটি স্থগিত করা হয়।
২০২১ সালে কয়েকবারই স্থগিত হওয়া সিরিজটি আয়োজনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ড। আর ঐ ম্যাচের পর আর কোনো ওয়ানডে খেলেনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
করোনা পরিস্তিতির উন্নতি হওয়ায় অবশেষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়াতে সিরিজটি দু’দলের কাছেই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
সুপার লীগে এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচ খেলে ১১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে নিউজিল্যান্ড। আর ১৫ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে অস্ট্রেলিয়া। তাই সিরিজের গুরুত্ব বিবেচনায় সবগুলো ম্যাচই জিততে চায় উভয় দলই।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ বলেন, ‘সুপার লিগের অংশ হওয়ায় এই সিরিজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে সিরিজ জয়ের সঙ্গে সঙ্গে সবগুলো ম্যাচই জিততে চাই আমরা। সিরিজে ১০ পয়েন্ট অনেক গুরুত্ব বহন করবে। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আমাদের রেকর্ড খুবই ভালো। সেই রেকর্ডও অক্ষুন্ন রাখতে চাই।’
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘদিন সিরিজ জিততে না পারার আক্ষেপ আছে নিউজিল্যান্ডের। তবে ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে জয় পায় তারা।
এবার সুপার লিগ গুরুত্ব বিবেচনায় এবং অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়ের বন্ধ্যাত্ব ঘোঁচাতে মরিয়া নিউজিল্যান্ড। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, ‘আমরা সুপার লিগের টেবিলে ভালো অবস্থানে আছি। তবে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্ত করার সুযোগ থাকছে। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘদিন সিরিজ জিততে না পারাটা দুঃখজনক। এবার আমরা সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরতে চাই।’
গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ফেরে নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে ঘরের মাঠে শনিবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দুই ম্যাচ জিতলেও, তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের কাছে হারে অজিরা। যদিও সিরিজটি ২-১ ব্যবধানেই জিতে নেয় ফিঞ্চের দল।
অর্থাৎ, পৃথকভাবে হলেও সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়েই এবার নিজেরাই মুখোমুখি দুই প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৩৮ বার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে জয়ের পাল্লা ভারী অজিদেরই। ৯২টি ম্যাচ জিতেছে তারা। ৩৯টিতে জয় পায় নিউজিল্যান্ড। আর ৭টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
এনএস//