ঋণ না নিয়েও পরিশোধের চিঠি পেয়েছেন দরিদ্র ৫০ নারী (ভিডিও)
কুয়াকাটা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:১৭ এএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
ঋণ নেননি কিন্তু ঋণ পরিশোধের চিঠি পেয়েছেন। ব্যাংক থেকে একের পর চাপও দেওয়া হচ্ছে। ভূক্তভোগী পটুয়াখালীর ৫০ হতদরিদ্র নারী। যাদের স্বাক্ষর জাল করে অন্যরা তুলেছে ঋণের টাকা।
কলাপাড়া পৌরশহরের আন্ধারমানিক নদীর উল্টো পাড়ে সরকারি আবাসনে থাকেন হোটেল শ্রমিক জাকিয়া বেগম। তার নামে ৭৬ হাজার ৩শ’ ৫৬ টাকা ঋণ পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে কলাপাড়া সোনালী ব্যাংক। একইভাবে সরকারি আবাসনের আরেক বাসিন্দা মঞ্জু রানীসহ প্রায় ৫০ হতদরিদ্র নারী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের নোটিশ পেয়েছেন। মামলা আতঙ্কে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনও করেছেন ভূক্তভোগীরা।
ভূক্তভোগী নারীরা বলেন, “এক সপ্তাহ আগে নোটিশ এসেছে। এ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই এই ঋণ কিভাবে দিব। বীমা করার নামে আমাদের ছবি তুলে নিয়ে যায়। সে সময় আমাদেরকে ১ হাজার করে টাকা দিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে নেয় তারা।”
২০১৫-১৬ সালের দিকে বীমা করার কথা বলে গরিব ও নিরক্ষর এসব নারীদের এনআইডির ফটোকপি ও ছবিসহ স্বাক্ষর নেয় প্রতারক চক্র। প্রত্যেককে ওই সময় এক হাজার করে টাকা দেয় চক্রটি।
ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, “সোনালী ব্যাংকের মনির স্যার, পিয়ারা, জাহানারা, মাকসুদা- এরা মিলে আমাদের সরলতায় এই কাজটি করেছে।”
এ ঘটনার বিচার চেয়ে আরেক নারী বলেন, “আমি এর বিচার চাই, কিসের জন্য আমাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কি দিয়ে ঋণ শোধ করবো। আমার তো কিছু নাই।”
ঘটনার পর থেকে প্রতারক চক্রের সমন্বয়ক পিয়ারা বেগম পরিবারসহ এলাকা ছেড়েছেন।
ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানান সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার। তবে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
টেলিফোনে কলাপাড়া বন্দর শাখার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মোঃ নাজমুল আহসান বলেন, “সব ধরনের ডকুমেন্ট আছে। টাকা আদায়ের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা এখন ঋণ পরিশোধ করবেন।”
হতদরিদ্রদের ঋণের জালে ফাঁসিয়ে প্রতারক চক্র এখনও রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তাদের শাস্তিসহ ঋণের দায়মুক্তি চান দরিদ্র পরিবারগুলো।
এএইচ