ই-লার্নিং চালু করা গেলে পাঁচ বছরেই দূর হবে নিরক্ষরতা (ভিডিও)
রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:১৮ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। একযুগে সাক্ষরতার হার বেড়েছে ৩১ শতাংশ। তবুও দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ২৪ শতাংশ এখনও নিরক্ষর। গবেষকরা বলছেন, নিরক্ষরতা দূরীকরণের পদ্ধতিতে ত্রুটি আছে; ডিজিটাল পদ্ধতিতে ই-লার্নিং চালু করা গেলে পাঁচ বছরেই শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন সম্ভব।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নিরক্ষরতা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ গ্রহণেও প্রতিবন্ধকতা তৈরির আশঙ্কা থাকছে। তাই এগিয়ে যেতে শতভাগ সাক্ষরতা খুবই জরুরি।
পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০১০ সালে দেশের সাক্ষরতার হার ছিল ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশে। অর্থ্যাৎ একযুগে সাক্ষরতা বেড়েছে ৩১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এখনও নিরক্ষর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ অনুযায়ী সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দেওয়া, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিসহ আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে সরকার।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মু. নুরুজ্জামান শরীফ বলেন, “সাক্ষরতা প্রকল্পে ৬৪ জেলার ২৫০টি উপজেলায় ৪৫ লাখ নিরক্ষর নারী-পুরুষকে সাক্ষরদান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যে ২৪ লাখ ৫৯ হাজার লোকদের সাক্ষরদান করাতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তীতে আলট্রা কার্যক্রমে ৬৪ জেলার ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদেরকে সাক্ষরদান করে শিক্ষার মূল ধারায় নিয়ে আসা আমাদের মূল লক্ষ্য।”
তবে, সরকারের কিছু উদ্যোগের সাথে ভিন্নমত রয়েছে গবেষকদের। তারা বলছেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিও পরিচালিত কর্মসূচি দিয়ে শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন কঠিন। দ্রুত ও ত্রুটিমুক্ত লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন অনলাইন ভিত্তিক ই-লানিং সিস্টেম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, “স্কিলের জন্য যে ডিজিটাল ম্যাটারিয়াল এবং এই লার্নিং ম্যাটারিয়াল ডেভেলপট করে অ্যাপস তৈরির মাধ্যমে সমস্ত নিরক্ষর মানুষদের হাতে পৌঁছে দিতে পারি তাহলে পাঁচ বছরেই শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন করা সম্ভব।”
গতানুগতিক প্রকল্পভিত্তিক কার্যক্রম থেকে বের হয়ে আসার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, সাক্ষরতা কর্মসূচি উন্নয়ন বাজেটে না রেখে, রাজস্ব খাতে আনা দরকার।
অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম আরও বলেন, “উন্নয়নে বাজেটে এটাকে না রেখে রাজস্ব খাতে রাখতে হবে। যাতে করে এটি রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে পরিণত হয়।”
নিরক্ষর জনগোষ্ঠির সঠিক সংখ্যা নিরুপণ এবং শতভাগ সাক্ষরতার লক্ষ্য অর্জনের কাজ এগিয়ে নিতে একটি ডাটাবেইজ তৈরিরও পরামর্শ গবেষকদের।
এএইচ