ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

যুবকদের অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন জিয়া: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ১২:১৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:৫৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার

জাতির পিতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসা জিয়াউর রহমানই যুবসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। 

অনুষ্ঠানে মনোনীতদের হাতে শেখ হাসিনার পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যুবকরাই একটি দেশের প্রকৃত সম্পদ। তারাই দেশের নেতৃত্ব দিতে পারে, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই যুবসমাজের উন্নয়নে তিনি ব্যাপকভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন।”

তিনি বলেন, “যুবসমাজের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে জাতির পিতাকে হত্যার পর। পঁচাত্তরের পর সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করে। জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছিল। সেই জিয়াউর রহমান যুবসমাজের হাতে অস্ত্র, মাদক তুলে দিয়ে তাদের বিপথে পরিচালিত করেছিলেন। তিনি যুবসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে নিজের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন।

“তবে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর আবারও যুব সমাজকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়, আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে তাদেরকে গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হয়। বর্তমানে দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য উপযুক্ত জনশক্তি তৈরিতে কাজ করছে সরকার।”

তিনি বলেন, যুবকরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। যুবকরাই এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমি মনে করি, পুরস্কারপ্রাপ্তদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সবাই মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। এভাবে সারাদেশের তরুণ সমাজ এগিয়ে আসুক এটাই আমি চাই।”

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তরুণ সমাজের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, “(১৯৯৬ সালে) সরকারে আসার পর আমাদের লক্ষ্যই ছিল, দেশের যুব সমাজকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তখনকার যুগে কেউ কম্পিউটার শিখত না, কম্পিউটার ছিলই না। দুই-চারটা অফিসে হয়তো ডেস্কটপ সাজানো থাকত, কিন্তু কেউ ব্যবহার করত না। আমিই উদ্যোগ নিয়েছিলাম যে, প্রথমেই প্রযুক্তি শিক্ষা দিতে হবে।”

সেসময় বিজ্ঞান বা কারিগরি শিক্ষায় মাত্র ৭ শতাংশ ছেলেমেয়ে সম্পৃক্ত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কারণে আমি ১২টা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিই। কারিগরি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেই। সেই সঙ্গে সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে যেন যুব সমাজ সম্পৃক্ত হয় তার ব্যবস্থা করি। একই সঙ্গে আমাদের যুব সমাজ বেকারত্বের হাত থেকে যেন মুক্তি পায়, সে জন্য সমাজের সবকিছু আমি বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “টেলিভিশন থেকে শুরু করে ব্যাংক, বিমাসহ যা যা কিছু আছে, বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, যত বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পদক্ষেপটা নিয়েছিলাম।”

সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য এবার ১১ জনকে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়।

যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান ক্যাটাগরিতে এ বছর পুরস্কার পেয়েছেন শরীয়তপুরের বাসিন্দা মাসুম আলম এবং নেত্রকোণার কামরুন নাহার লিপি, শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে জাগো ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক করভি রাকসান্দ দ্রুব এবং পেন ফাউন্ডেশনের মেঘনা খাতুন। 

দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন রাঙ্গামাটির এন কে এম মুন্না তালুকদার এবং লক্ষ্মীপুরের রাজু আহমেদ। 
জ্যেষ্ঠদের প্রতি আদর্শ সেবা বা সমাজকল্যাণে অবদানের জন্য বরিশালের মিল্টন সমাদ্দার এবং সুনামগঞ্জের বাসিন্দা কাস্মিরুল হক পুরস্কার পেয়েছেন।

আর ক্রীড়া, কলা (চারু ও কারু) ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শেরপুরের নিগার সুলতানা জ্যোতি এবং রাজশাহীর মোস্তফা সরকার।

এএইচএস