ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ১ ১৪৩১

ডিসেম্বরেই খুলছে বঙ্গবন্ধু টানেল (ভিডিও)

হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম থেকে

প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার

ডিসেম্বরেই খুলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এখন চলছে টোল প্লাজাসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণ। এরইমধ্যে ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান নির্মাণ কাজে জড়িত প্রকৌশলীরা।

নদীর তলদেশে গড়ে তোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই চালুর লক্ষ্য নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রকৌশলীরা। এরইমধ্যে নদীর তলদেশে স্থাপন করা হয়েছে দুটি টিউব। নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, ৭৭২ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার। 

এখন চলছে কর্ণফুলীর দক্ষিণ প্রান্তে আনোয়ারা অংশে টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ। এরইমধ্যে ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান নির্মাণ কাজে জড়িত প্রকৌশলীরা।

প্রকৌশলীরা বলেন, “স্ট্রাকচার পুরো হয়ে গেছে, ডেকারেশনের কাজটি বাকি আছে। এখন টোলের কাজ চলছে, এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে।”

ডিসেম্বরে নদীর তলে টানেল চালু হওয়ার ঘোষণায় খুশি স্থানীয়রাও।

তারা জানান, “টানেলটি চালু হলে জ্যামের কোন কারণ হবে না। আমরা টানেলের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে পারবো। এর সুবাদে জায়গা-জমির দামও বেড়েছে অনেক।”

টানেলের কারণে চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে গড়ে তোলা ডিপ সী-পোর্টের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ স্থাপনসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাণ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের শিল্পপতি, ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীরা।  

বিজিএমইএ সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি শিল্পপতি আবু তৈয়র বলেন, “ট্রাক নিয়ে আমি ওখানে পৌঁছানে পারছি কিনা। ওই জায়গাটুকু করলেই ভিত্তি খাত থেকে জায়গা নিয়ে আমরা শুরু করে দিব।”

বিনিয়োগকারী নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিস্তৃর্ণ এলাকায় উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়ে গেছে।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালু হলে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যিক হাব, এমনটাই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। 

ইসলামী ব্যাংক লিমিটডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো: সেলিম উদ্দিন বলেন, “এই টানেলটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটা দক্ষিণ এশিয়ার বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।”

বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে প্রায় ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেলটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর টানেলের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।         

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। আনোয়ারা অংশে টোল প্লাজার কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলেছেন কর্তৃপক্ষ। আর এই কাজ শেষ হলেই আগামী ডিসেম্বরেই উদ্বোধন হবে টানেলটি। আর এর ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এএইচ