উপমহাদেশের প্রথম গণগ্রন্থাগারের করুণদশা (ভিডিও)
রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার
প্রায় দুইশ’ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত উপমহাদেশের প্রথম গণগ্রন্থাগার রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি। কালের বিবর্তনে এখন এর করুণদশা।
জমিদার চন্ডি রায়ের দান করা প্রায় তিন একর জমিতে ১৮৩২ সালে স্থাপিত হয় এই পাবলিক লাইব্রেরি। বিদেশি জার্নাল, সাহিত্য, নাটক, ইতিহাসসহ নানা ধরনের প্রায় ৩৫ হাজার বই নিয়ে যাত্রা শুরু। নগরীর কেন্দ্রস্থলে লাইব্রেরির সামনের বিশাল মাঠে হতো জনসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানও।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগ পর্যন্ত ভালোই চলছিল। এরপর কমিটি গঠনসহ নানা কারণে কার্যক্রম স্থবির। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদাররা লাইব্রেরি ও আশপাশের এলাকায় ক্যাম্প করে। বহু মূল্যবান বই রান্নার জ্বালানি হিসেবে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলে।
পেছনের ৫৬ শতক জমিতে শিল্পকলা একাডেমির অত্যাধুনিক ভবন নির্মিত হলেও ক্ষতিপূরণ দেয়নি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়। জায়গা দখল করেছে রংপুর সাহিত্য পরিষদ ও রংপুর উন্নয়ন পরিষদও। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এখন সাত হাজারের মতো বই নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে লাইব্রেরিটি।
স্থানীয়রা জানান, এটি উপমহাদেশের প্রথম পাবলিক লাইব্রেরি। যেটি কোলকাতা ও ঢাকার বাইরে প্রথম পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয় গ্রন্থাগারের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা শুধু ঢাকা নিয়ে বসে থাকলে হবে না। দেশের প্রতিটি জেলায়, উপজেলায় যে পাঠাগার ছিল সে পাঠাগারগুলোতে তাদের বিনিয়োগ করা দরকার।
ভবনগুলোর বেহালদশা, মাঠেরও করুণ অবস্থা। নেই লাইব্রেরিয়ান। আড়াই হাজার টাকা সম্মানির একজন কেয়ারটেকার দেখভাল করছেন ইতিহাসের এই সাক্ষীকে।
পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য কবি ও লেখক আফতাব হোসেন বলেন, “জেলা প্রশাসকের কিছু অর্থায়ন করায় লাইব্রেরিটির কিছু সংস্কার করা সম্ভব হয়েছে। আরও কিছু বাকি আছে।
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন বলেন, “এটা সংস্কার করতে গেলে ৫০ লাখ টাকা দরকার। আমরা চাচ্ছি এটা সংস্কার করে আধুনিক ছেলেমেয়েদের কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে এর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে।”
ঐতিহ্যবাহী লাইব্রেরিটিকে রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান বইপ্রেমিদের।
এএইচ/