ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সস্তায় যাদুকাটা নদী ভ্রমন

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ০৪:২০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৪:৩৮ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার

যাদুকাটা নদীতে বয়ে চলা স্বচ্ছ পানির ধারা, নীল আকাশ আর সবুজ পাহাড় একসাথে মিলেমিশে অপূর্ব এক ক্যানভাসের সৃষ্টি করেছে। যেখানে প্রকৃতি তার আপন মহিমায় নদীর প্রতিটি অংশ স্বযত্নে সাজিয়ে রেখেছে। 

যাদুকাটা নদীর যেন রূপের শেষ নেই। এই রূপে মুগ্ধ হচ্ছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পর্যটক। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশ থেকেও এসে ভিড় করছে শত শত পর্যটক। যাদুকাটা নদীর সৌন্দর্য পিপাসুর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। সারা বছরই পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় যাদুকাটা নদীর তীর। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড়ের বুক চিরে পাহাড়ি ঝর্ণার পানি মিলিত হয়েছে সীমান্ত নদী যাদুকাটায়। এক সঙ্গে একাধিক সৌন্দর্য দেখার মত স্থান।

যাদুকাটা নদীর পশ্চিতীরে সুনামগঞ্জের আইফেল টাওয়ার খ্যাত বারেক টিলা। নদীর পাশেই আছে বৃহত্তর শিমুল বাগানছাড়াও নানা দর্শনীয় স্থান। এর পাশাপাশি যাদুকাটা নদীতে চোখে পড়ে স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা। জীবিকা নির্বাহ করছেন হাজার হাজার শ্রমিক।

কিভাবে যাবেন
যাদুকাটা নদী দেখতে যেতে হলে প্রথমে সুনামগঞ্জ যেতে হবে। প্রতিদিন ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়। এসব বাসে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে প্রায় ৭০০ টাকা আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘন্টা সময় লাগে।

তারপর সুনামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেল ভাড়া করে চলে যান যাদুকাটা নদী দেখতে। মোটরসাইকেল ভাড়া নিবে ২০০-২৫০ টাকার মত। এক মোটরসাইকেলে দুইজন উঠা যাবে। যাদুকাটা নদীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখতে বারিক্কা টিলায় উঠে পড়ুন। আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে।

কোথায় থাকবেন
যাদুকাটা নদী দেখতে আসা পর্যটকরা সাধারণত এখানে অবস্থান করেন না। এখানে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। তবুও প্রয়োজনে থাকতে হলে যাদুকাটা নদীর কাছে বড়ছড়া বাজার গিয়ে থাকতে পারবেন। বড়ছড়া বাজারে থাকার জন্যে কয়েকটি মোটামুটি মানের আবাসিক হোটেল আছে। তবে যাদুকাটা নদী দেখে রাতে থাকার জন্য সুনামগঞ্জে ফিরে আসাই সবচেয়ে ভাল হবে। সুনামগঞ্জে সর্বনিম্ন ২০০ টাকার মধ্যেও এটাস্ট বাথরুম সহ ১ বেডের হোটেল রুম পাওয়া যাবে। 

কোথায় খাবেন
জাদুকাটা নদীর একপাশে লাউয়ের গড় অন্যপাশে বারিক টিলা পাহাড়। লাউয়ের গড় বাজারে মোটামুটি মানের দেশিয় খাবার পাবেন। বারিক টিলার নিচে নাস্তা করার ছোট হোটেল আছে। এছাড়া প্রয়োজন হলে সাথে কিছু শুকনো খাবার রাখতে পারেন। ভালো খাবার খেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে এসেই খেতে হবে।

ভ্রমণ টিপস

  • যাদুকাটা নদীর কাছেই শিমুল বাগান ও নিলাদ্রী লেক, বারেক টিলা, টেকের ঘাট সময় নিয়ে ঘুরে আসুন।
  • দিনে দিনে ঘুরে আসতে চাইলে সুনামগঞ্জ থেকে সকাল সকাল ভ্রমন শুরু করুন।
  • থাকতে চাইলে বড়ছড়া চলে যাবেন। ভাড়ার ক্ষেত্রে দরদাম করুন ভালো মতো।
  • খরচ কমাতে চাইলে অফ সিজনে ভ্রমণ করুন।
  • নদী থেকে পাথর ও বালি উত্তোলনের ফলে অনেক গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়, পানিতে নামলে সাবধান থাকবেন।
  • শুকনো কালে নদীতে হাটু পানি থাকে। কিন্তু বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে অনেক স্রোত থাকে।
  • বাংলাদেশ বর্ডার অতিক্রম করবেন না।
  • স্থানীয় মানুষদের সাথে ভালো আচরণ করুন।