ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সাফল্যের চূড়ায় সাত তরুণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৮ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার

২০০৯ সাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের তিনজন বন্ধু, আর কয়েকমাস পর ওরা পাশ করবে। ওরা সবাই মেধাবীদের মধ্যেও মেধাবী। পাশের বন্ধুরা যখন দেশের বাইরে পাড়ি দেয়ার জন্য জিআরই, টোফেল দিচ্ছে, বিভিন্ন নামকরা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করছে, এই তিন বন্ধুর স্বপ্ন দেশে কি করা যায়, দেশের জন্য কি করা যায়। 

স্বপ্ন বড় কিন্তু বাস্তব অনেক কঠিন। এই তিন বন্ধুই বাংলাদেশের স্বনামধন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করে। এর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ এ নিজেদের তৈরি করা একটা কারিগরি কোর্স চালু করে।

সময়ের সাথে বাজার বিষয়ে পরিচিতি আর সাহস দুই-ই বাড়তে থাকে। এর সাথে যুক্ত হয় এমন স্বপ্নবিলাসী আরো কিছু তরুণের। ২০১১ সালে ৭ জন মিলে তৈরি করেন রিভেরী পাওয়ার এন্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ। মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে এই প্রতিষ্ঠান ৩৫০ জনেরও বেশি প্রকৌশলী নিয়ে বড় একটি টিম ও শক্ত একটি ইন্জিনিয়ারিং প্লাটফর্ম তৈরি করে যারা যে কোন ধরনের জটিল প্রকল্পের/সমস্যার বাস্তবায়ন/সমাধান করতে সক্ষম। 

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে ‘রিভেরী’ এখন অনন্য ব্র্যান্ড, যা রিভেরী টিম ও এর লিডারদের ভিশন, মেধা, সততা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল।

রিভেরীর উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকুরি করার সুবাদে একটি বিষয় লক্ষ্য করেন যে বাংলাদেশে প্রচুর বিদেশি প্রকৌশলীরা কাজ করেন। মেধায়, উদ্যমে দেশীয় প্রকৌশলীরা কোনো অংশেই কম না কিন্তু এমন কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান নেই যারা গ্রাহক পর্যায়ে সেই আস্থা অর্জন করেছে। এই আইডিয়া দিয়েই শুরু।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে দেশের বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা ৩,৩০০ মেগা ওয়াট, যা এখন প্রায় ২৫,০০০ মেগা ওয়াটেরও বেশি। এই সময় যে শুধু পাওয়ার জেনারেশনে উন্নয়ন হয়েছে তাই নয় বরং ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন এ ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ নির্ভর প্রচুর কলকারখানা গড়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে রিভেরীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আল জিলানী বলেন, আমাদের সম্পদ মানুষ আর মাটি। বাংলাদেশের জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি তৈরি, আমদানি নির্ভরতা কমানো ও রপ্তানি বাড়ানো বৈদেশিক মুদ্রা আয় ব্যয়ের যে অসামঞ্জস্যতা তা রোধ করতে পারে এই খাত থেকে সম্ভব। সারাবিশ্বেই বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির গ্রাহক বেড়ে চলছে আর এই চাহিদা সবসময় থাকবে। এ সেক্টরের পাশাপাশি এইখাতও আমাদের অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন দেশে আমাদের পণ্যগুলো রপ্তানি করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

রিভেরীর চেয়ারম্যান মো. জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আর সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুল হক বলেন, এই দেশ আমাদের, এই দেশের তরুণ প্রকৌশলীদের নিয়েই আমাদের এগিয়ে যাওয়া। দেশের বাইরে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি আমরাই তৈরি করতে পারবো। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরা শুধু শ্রমিক নির্ভর দেশ না; মেধা মননে আমরা কারো চেয়ে পিছিয়ে থাকবো না।

এসি