ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই অদিতাকে হত্যা, রনির দায় স্বীকার
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৩৬ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার
মূলহোতা সাবেক প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনি (৩০)
নোয়াখালীতে স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মূল অভিযুক্ত আবদুর রহিম রনি (৩০)। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই অদিতাকে হত্যা করার কথা জানিয়েছে সে।
শনিবার বিকেলে আমলী আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদ-এর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি আবদুর রহিম রনি। পরে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
আসামির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার দিন আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অদিতাদের বাসার তৃতীয় তলায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিল রনি। অদিতাদের দরজার সামনে গিয়ে নক দিলে দরজা খুলে দেয় অদিতা। এক সময়ের কোচিং শিক্ষক থাকায় তাকে ভিতরে বসতে বলে অদিতা। কিছুক্ষণ তার সাথে গল্প করার পর অদিতা রান্না ঘরে গেলে তাকে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পাশের কক্ষে এনে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় রনি। ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে প্রথমে অদিতার পরনের ওড়না দিয়ে তার হাত বেঁধে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্ট করে রনি। র্দীঘ সময় অতিবাহিত হলেও ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বালিস দিয়ে মুখ চেপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায় অদিতা। এসব ঘটনার সময় অদিতার চিৎকারের শব্দ যেন বাইরে না যায়, সেজন্য টিভিতে ফুল ভলিয়ম, পানির ট্যাপ ও ফ্যানগুলো চালিয়ে রাখে রনি।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, টিভিতে ক্রাইমপেট্রোল দেখে হত্যার বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য রান্না ঘর থেকে একটি ছোরা এনে প্রথমে অদিতার দুই হাতের রগ ও পরে গলা কেটে ফেলা হয়। ঘটনাটি ডাকাতি প্রমাণ করার জন্য ঘরের আলমেরিসহ বিভিন্নস্থানে থাকা জিনিসপত্র এলোমেলো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বাইরে দিয়ে তালা দিয়ে চলে যায় রনি।
পুলিশ সুপার বলেন, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে এসব ঘটনা সে একাই ঘটিয়েছে বলেও স্বীকার করেছে রনি। তারপরও এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না, তা তদন্ত করা হচ্ছে। আর কারও জড়িত থাকার তথ্য আসলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত এ ঘটনায় নিহতের মায়ের দায়ের করা মামলায় আবদুর রহিম রনিকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহতের মা রাজিয়া সুলতানা, বোন ও স্বজনরা হত্যাকারী রনির ফাঁসির দাবি করেছেন। একইসাথে তাদের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তারা।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারয়ণপুর এলাকার জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অদিতার হাত-পা ও গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে।
এনএস//