ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সুপার সানডেতে অনন্য নজির গড়ল এশিয়ার পাঁচ দল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৯:০৫ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার

ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দলের তিন অধিনায়ক

ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দলের তিন অধিনায়ক

একই দিনে জিতল ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রোববার দিনটি ছিল উপমহাদেশের জয় জয়কার। তিন দেশ জয় পেল যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। 

পিছিয়ে ছিল না নারীরাও। ভারতের মেয়েদের সঙ্গে একই দিনে বাংলাদেশের মেয়েরাও। তারা হারিয়েছে যথাক্রমে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড নারী দলকে। ক্রিকেটের ইতিহাস এমন একটা দিন কী অতীতে দেখেছে কখনও!

হায়দরাবাদ, করাচি, দুবাই, আবু ধাবি এবং লর্ডস। রোববার এই পাঁচ শহরের চারটিতেই প্রায় একই সময় শুরু হয়েছিল চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ম্যাচগুলো ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। পরস্পরের বিপক্ষে খেলা ছিল না ঠিকই। তবু যেন কোথাও একটা অদৃশ্য সম্মানের টানাপোড়েন ছিল। 

তিন প্রতিবেশী দেশের কে জিতবে, কে হারবে- তা নিয়েই তুঙ্গে ছিল আগ্রহের পারদ। ভারত-ইংল্যান্ড নারী দলের ওয়ানডে ম্যাচটিতে সহজ জয়ই পায় ভারতের মেয়রা। তবে বাকি চারটি ম্যাচেই ছিল টান টান উত্তেজনা। ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত। শেষ অবধি নিজ নিজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিতেও সক্ষম হয়েছে তিন প্রতিবেশী দেশ। 

ভারত পুরুষ দল ৬ উইকেটে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল ২-১ ব্যবধান। পাকিস্তান ৩ রানে ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সাত ম্যাচের সিরিজে সমতা ফেরাল (২-২)। বাংলাদেশও আমিরাতের বিপক্ষে দু’ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। সঙ্গে দেশটির মেয়েরাও আইরিশ কন্যাদের হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে।

এর থেকেও আকর্ষণীয় বিষয় হলো- একই দিনে সম্ভবত এই প্রথমবার ক্রিকেট মাঠে জয় পেল ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ! ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকল ২৫ সেপ্টেম্বরের সুপার সানডে।

ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রিকেট অনেকটা ধর্মের মতো। প্রতিবেশী তিন দেশের মানুষ ক্রিকেট দেখেন রীতিমত নাওয়া খাওয়া ভুলেই। ক্রিকেটের জন্য মাইলের পর মাইল রাস্তা হাঁটতেও রাজি থাকেন। ক্রিকেট ম্যাচের টিকিটের জন্য করেন মারামারি, হাহাকার। প্রিয় দল বা ক্রিকেটারের জন্য প্রার্থনা, দোয়া তো আছেই। 

এই তিন দেশেই অলিতে গলিতে ক্রিকেট খেলে থেকেন পাঁচ থেকে পঞ্চাশ বছরের আবাল-বৃদ্ধরা। ক্রিকেট যেমন সব দুঃখ ভুলিয়ে দেয় এদের, তেমনি আবার কেড়ে নেয় সব আনন্দও। 

ক্রিকেট বিশ্বের প্রাণ ভোমরা তো ভারতীয় উপমহাদেশই। শ্রীলঙ্কাও রয়েছে এই বন্ধনীতে। সম্প্রতি দেশটির রাজনৈতিক এবং আর্থিক সঙ্কট বা সমস্যার মধ্যেও এশিয়া কাপ জিতে শ্রীলঙ্কার মানুষকে তৃপ্ত করেছেন দাসুন শনাকারা। ভাসিয়েছেন অনাবিল আনন্দে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এশিয়ার দলগুলোর এই সাফল্য উপমহাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা নিঃসন্দেহে বাড়াবে। এই চার দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা নিজেদের দলকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধবেন ভালো ফলাফলের জন্য। 

নিঃসন্দেহে ক্রিকেট দুনিয়াও তাকিয়ে থাকে এই উত্তেজনার দিকেই। একটা অ্যাশেজ বাদ দিলে আধুনিক ক্রিকেটের সব উত্তেজনা তো ভারতীয় উপমহাদেশেই। জয় হোক ক্রিকেটের, জয় হক উপমহাদেশের।

এনএস//