ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন কার্যক্রমে রাসিকের শতভাগ সফলতা অর্জন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১২ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই) ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নে শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)।

এ উপলক্ষে সোমবার বেলা ১২টায় নগর ভবনের সিটি হলরুমে শতভাগ ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন ঘোষণা এবং রাজশাহী বিভাগের চলমান ইপিআই কার্যক্রম পৌরসভা সমূহের মেয়রদের উদ্বুদ্ধকরণ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রাসিকের শতভাগ ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। 

এদিকে ইলেক্ট্রনিক ইমুনাইজেশন কার্যক্রমে শতভাগ সফলতা অর্জন করায় রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্র্ড-২০২২ প্রদান করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর ডাঃ মো. শামসুল হক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শতভাগ ইলেক্ট্রনিক ইমুনাইজেশন একটি অন্যন্য দৃষ্টান্ত। শিশুর জন্ম নিবন্ধন তার অধিকার। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠাও শিশুর অধিকার। শিশুর এই অধিকার বাস্তবায়নে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বদ্ধপরিকর। ইপিআই কার্যক্রম বাস্তবায়নে শুরু থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নিখুঁতভাবে কাজ করে আসছে। তারই সফলতাস্বরূপ জাতীয়ভাবে ইপিআই কর্মসূচিতে পরপর দশবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন দেশসেরা হয়েছে।

রাসিক মেয়র আরও বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল ইলেকট্রনিক ইপিআই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করি। আমরা ইলেকট্রনিক ইপিআই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সকল শিশুকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছি। টিকাদানের মাধ্যমে ১০টি রোগ থেকে আমাদের শিশুদের নিরাপদ রাখতে পেরেছি। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের ইপিআই প্রোগ্রাম ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের সহযোগিতা প্রদান করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।একই সাথে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সম্মানিত কাউন্সিলর ও স্বাস্থ্য-বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরিচ্ছন্নতা, বায়ুদূষণ রোধে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। করোনাকালে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবসময় মাঠে ছিল। করোনাকালে জনসচেতনা সৃষ্টি, খাদ্য বিতরণ, নগদ অর্থ বিতরণ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদান সহ টিকাপ্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছিল। ওয়ার্ডবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় নগরীর ১৪টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ২টি মাতৃসদন ও একটি সিটি হাসপাতাল রয়েছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠানে স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর ডাঃ শামসুল হক বলেন, ইপিআই কার্যক্রমে শতভাগ সফলতা অর্জন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এটি সফলতা অর্জন করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র, পরিষদ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সকলের ঐকান্তিক প্রচেস্টায়। এ কার্যক্রমের সফলতা প্রসঙ্গে জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় এটি প্রথম স্থান অর্জন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে সম্মানিত হয়েছেন। 

রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের প্রতিনিধি ডাঃ বর্ধন জং রানা, রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার এএনএম মঈনুল ইসলাম, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ হাবিবুল আহসান তালুকদার, ইপিআই প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ এনএম আবদুল্লা আল মুরাদ, গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র অয়েজউদ্দিন বিশ্বাস, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান। 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশনে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের ইপিআই প্রোগ্রাম ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এডভোকেসি সভা, প্রশিক্ষণ প্রদান এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ট্যাব প্রদান করা হয়েছে। কর্মসূচির আওতায় ৫৭ হাজার ৫১২ জন শিশু ও ৫১ হাজার ৭৭৫ জন মাকে ইলেকট্রনিক ইপিআই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। যার মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন কার্যক্রমে শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে রাসিক।
কেআই//