ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

কক্সবাজারে ৩০৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৫২ পিএম, ১ অক্টোবর ২০২২ শনিবার

অপেক্ষার পালা শেষে আজ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই আনন্দ উৎসবকে ঘিরে চারদিকে চলছে উৎসবের আমেজ। এখনও ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। আর সামর্থ্য অনুযায়ী কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন পূজার আয়োজকরা। 

এ বছর কক্সবাজারে মোট ৩০৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে ১৪৮টিতে প্রতিমা ও ১৫৭টি পূজা। তবে, প্রতিমা পূজাকে ঘিরে দুর্গাপূজার সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কক্সবাজার জেলার ৩০৫টি মণ্ডপের জন্য ১৫৩ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে মহালয়ার শুভ আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে শারদীয় দূর্গাপূজার ক্ষণগণনা। এবার দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে আসবেন। ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের বৃহৎ এ উৎসব শেষ হবে। 

কক্সবাজার সদর উপজেলায় ১৭টিতে প্রতিমা পূজা ও ১১টি ঘট পূজা, ঈদগাঁও উপজেলায় ১৭টি প্রতিমা পূঁজা ও ৯টিতে ঘট পূজা, কক্সবাজার পৌরসভায় ১১টিতে প্রতিমা পূজা ও ১০টিতে ঘট পূজা, রামু উপজেলায় ২২টিতে প্রতিমা পূজা ও ১০টিতে ঘট পূজা, চকরিয়া উপজেলায় (পৌরসভাসহ) ৪৮টিতে প্রতিমা পূজা ও ৪৩টিতে ঘট পূজা, পেকুয়া উপজেলায় ৫টিতে প্রতিমা পূজা ও ৪টিতে ঘট পূজা, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১৩টিতে প্রতিমা পূজা ও ৩২টিতে ঘট পূজা, মহেশখালী উপজেলায় (পৌরসভাসহ) ১টিতে প্রতিমা পূজা ও ৩০টিতে ঘট পূজা, উখিয়া উপজেলায় ৭টিতে প্রতিমা পূজা ও ৮টিতে ঘট পূজা, টেকনাফ উপজেলায় ৬টিতে প্রতিমা পূজা ও উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১টিতে প্রতিমা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

শারদীয় দুর্গাপুজার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন কক্সবাজার জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ। রোহিঙ্গা দুর্বৃত্ত, কিশোর গ্যাং, ছিনতাইকারি এবং ধর্মান্ধতার কারণে কক্সবাজারে এবারের দুর্গাপূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতারা। জেলার তিন উপজেলায় ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মণ্ডপের তালিকা করে জেলা প্রশাসনের কাছে দেয়া হয়েছে।

তারা বলেছেন, অনাকাংখিত যেকোন ঘটনা এড়াতে পূজা মন্ডপগুলো সিসি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

পূজা কমিটির শীর্ষ নেতারা বলেন, উখিয়া রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ একটি গোষ্টি ক্যাম্পের পাশে থাকা মন্ডপসহ ৭টি, কক্সবাজার শহরের কিশোর গ্যাং এবং ছিনতাইকারীদের কারণে বৈদ্য ঘোনা, গোলদিঘির পাড়, বিজিবি ক্যাম্পসহ ৫টি এবং পেকুয়া উপজেলার ৬টি মন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি গোষ্টি দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে তৎপর। তারা সুযোগ পেলেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় এ উৎসব দূর্গা পূজায় হামলার ধৃষ্টতা দেখাতে পারে।

ককক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানিয়েছেন, দুর্গাপূজার শুরু হয়েছে। এখন চলছে উৎস। এই উৎসবে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল কর বলেন, এবার জেলায় ১৮টি মণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মণ্ডপের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি কাজ করবে পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি পূজা মন্ডপের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়ে কাজ করছি। দুর্গাপূজায় যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
কেআই//