ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কুবি ক্যাম্পাস
কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৫১ এএম, ২ অক্টোবর ২০২২ রবিবার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তিকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
শনিবার (১ অক্টোবর) বিকাল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের একটি দল ৪০ থেকে ৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে এবং বঙ্গবন্ধু হলে প্রবেশ করে। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর প্রধান ফটক থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত মোটরসাইকেল শো-ডাউন করে ছাত্রলীগের একটি দল। শহিদ মিনার থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এসে ককটেল ও ফাঁকা গুলির ছুঁড়ে হল থেকে নেতাকর্মীদের বের হতে বলেন তারা।
এসময় ইলিয়াস হোসেন সবুজ বিরোধী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহীর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয় তারা। প্রায় ২০ মিনিট ক্যাম্পাসে অবস্থান করার পর প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দীকী ও অন্যান্য শিক্ষক এসে তাদেরকে অনুরোধ করলে বেরিয়ে যান তারা।
এরপর তাদেরকে প্রতিহত করতে ইলিয়াসের অনুসারীরা হল থেকে নামতে শুরু করে। এসময় তাদের হাতে রামদা, হকি স্টিক ও লাঠিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।
‘ক্যাম্পাস ও প্রধান ফটক বন্ধ থাকার পরও কিভাবে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে শোডাউন করে’- এ নিয়ে প্রক্টরের সাথে বাগবিণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, “কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামালকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল করা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টিকে ঘোলাটে করার জন্য তারা (ইলিয়াসের অনুসারীরা) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করার পরও তারা বিষয়টিকে অস্বীকার করে যাচ্ছে।”
ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, “বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের কালোরাত্রি ছাড়া হলের ভেতরে ঢুকে গুলি করা, ককটেল মারা, পুলিশ এবং প্রক্টরের সামনে দিয়ে ক্যাম্পাস গেইট অতিক্রম করে হলে উঠে যাওয়া, প্রক্টরের পাশেই ককটেল ফোটানো- এটি বিরল ঘটনা হয়ে থাকবে। এখানে তিন-চারজন সাবেক ছাত্র, অটোচালক, সিএনজি চালক, বহিরাগত, বিভিন্ন মামলার আসামি ছিল।”
ইলিয়াস আরও বলেন, “ক্যাম্পাসে যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত মামলা করতে হবে। তা না শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে কঠিন আন্দোলনে যাবো, দরকার হলে আমরণ অনশন করবো।”
ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানতে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে কয়েকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেনি।
এর আগে শুক্রবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। তবে কিছুক্ষণ পরই আবার সেটি মুছে ফেলায় দু’ভাগ হয়ে পড়ে শাখা ছাত্রলীগ।
ইলিয়াসের অনুসারীরা প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিকে ভূয়া বললেও রেজার অনুসারীরা একে সত্য বলে দাবি করছেন।
এএইচ